নাটোরের সিংড়ায় পড়াশোনার খরচ জোগাতে হোটেলে কাজ করে জমজ দুই ভাই বাদশা খান ও মাসুম খান। উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের রাখালগাছা গ্রামের দরিদ্র রিক্সাচালক ফুলচাঁন খাঁ’র পুত্র তাঁরা। তাঁদের বয়স ১৩ বছর। সিংড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকার চলনবিলের কুটুমবাড়ি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে ১৭০ টাকা দিনমজুরি হিসেবে কাজ করে তাঁরা।
বাদশা আলহাজ্ব রহিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র, বড় হয়ে শিক্ষক হতে চায় সে। মাসুম অভাবের কারণে প্রাথমিক পাশ করে পড়াশোনা বাদ দেয় তবে জানুয়ারিতে আবার স্কুলে ভর্তি হবে সে। বড় হয়ে পুলিশ অফিসার হতে ইচ্ছুক মাসুম। বাবা-মা ও চার ভাই নিয়ে সংসার তাঁদের। বড় ভাই হাসান খাঁ ঢাকায় চাকুরি করে। মেজ ভাই রানা খাঁ দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরিক্ষা দেবে এবার। সে কৃষিকাজ করে পড়াশোনার খরচ জোগায়। দরিদ্রতা দমাতে পারেনি এ পরিবারের তিন সন্তানের পড়াশোনা। দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে পড়াশোনা করছে ফুলচাঁন খা’র তিন পুত্র।
বাদশা খান ও মাসুম খান বলেন, কাজ করে সেই টাকা দিয়ে পড়াশোনা করি এবং কিছু টাকা বাড়িতেও দেই। হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়। শিক্ষা অর্জন করে আমরা প্রতিষ্ঠিত হতে চাই।
চলনবিলের কুটুমবাড়ি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের মালিক শরিফ উদ্দিন বলেন, তাঁরা খুবই ভালো ছেলে। কষ্ট করে পড়াশোনা করছে। আমরা তাঁদের শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক ছাড় দেই।
স্থানীয় সংবাদকর্মী আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, দরিদ্রতা তাঁদের কাছে হেরে গেছে, জিতে গেছে শিক্ষা। সমাজের বিত্তবানদের উচিত তাঁদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়া। আমি সবসময় তাঁদের সাফল্য কামনা করি।