নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে:
রাজশাহী জেলা শহর ও বিভিন্ন উপজেলার কারিগররা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লেপ-তোষক বানানোর কাজে। ক্রেতাদের আনাগোনায় জমজমাট হয়ে উঠেছে লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে। শীতে উষ্ণতায় লেপের কদরই আলাদা। এবার কার্তিকের একিবাওে শেষের দিকে রাজশাহীতে শীতের আগমন দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আশ্বিনে গা শিন শিন করার ভাব প্রকৃতিতে না পাওয়া গেলেও কার্তিকের শেষে শীতের অনুভূতি মিলেছে। দিনে গরম,রাতে ঠান্ডা আর সাত সকালে ঘাস, লতাপাতার ওপর জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দেয় শীত এসে গেছে। তৈরী হও শীতবস্ত্র নিয়ে শীত মোকাবেলায়। ফলে শুরু হয়েছে শীতে ব্যবহার্য লেপ বানানোর কাজ। শীতকে কেন্দ্র করে রাজনশাহী মহানগ ও বিভিন্ন উপজেলার দোকানগুলোতে চলছে লেপ তৈরির ব্যস্ততা। শীতের প্রস্তুতি বলতে গরম কাপড়কে আমরা বুঝে থাকি। আর রাতে গায়ে দেয়ার জন্য লেপ, কম্বল বা কাঁথা। এবার কার্পাস তুলায় প্রতি ডবল লেপ তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১২ থেকে ১৫’শ টাকা এবং সিঙ্গেল লেপ তৈরিতে ৭ থেকে ৯’শ টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান দোকান ও ক্রেতারা। শীতকে কেন্দ্র করে নগরীর গণকপাড়া মোড় এলাকায় লেপ-তোষকের দোকানে লেপ বানানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের তুলা স্তুপীকৃত দেখা যায়। শীত মৌসুম শুরু হওয়ায় লেপ বানানোর জন্য আগাম এ প্রস্তুতি রেখেছেন দোকানিরা। কারিগররা তাদের অর্ডার মোতাবেক লেপ সেলাইয়ের কাজ শুরু করেছেন। এছাড়া দোকানগুলোতে রেডিমেড লেপ বিক্রয়ের জন্য আগাম সেলাই করে প্রস্তুত রাখতে দেখা যায়। এদিকে,তাহেরপুর পৌরহাট এলাকায় কারিগররা লেপ-তোষক তৈরি করতে সময় পার করছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত লেপ তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন কারিগররা। শীতের হাত থেকে বাঁচতে আবহমানকাল থেকে চলছে লেপ তৈরির কাজ। লেপ তৈরিতে লাল মার্কিন সুতি কাপড়, থান কাপড় ব্যবহার, কার্পাস তুলা, সাদা মিডিয়াম মোটা ঝিল সুতা, বড় এবং মাঝারি সুই। এছাড়া সাদা তুলা, কালো তুলা, কার্পাস তুলা, শিমুল তুলা দিয়ে লেপের পাশাপাশি বিভিন ধরনের জিনিস তৈরি করছেন কারিগররা। তবে শিমুল তুলার বালিশ ভাল হয় বলে এ তুলা দিয়ে বালিশ বানানো হচ্ছে। লেপ তৈরির কারিগরা জানান,এখনো শীত বেশি না পড়ায় লেপ তৈরির কাজ কম হচ্ছে। মাত্র ২-৩ মাস লেপ তৈরির কাজ করা হয়। মাঘ মাসে শীতের সময় কাজ কম হয়। কারণ তার আগে লেপ তৈরি করেন ক্রেতারা। একটা লেপ তৈরিতে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে এবং ৪ থেকে ৫ কেজি তুলা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া তারা জানান, এবার লেপ তৈরির কাজ কম হওয়ার বিভিন্ন ধরনের কম্বল বাজারে বিক্রি হচ্ছে। যা ধনীরা লেপ তৈরিতে কম আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে মধ্যে ও নি¤œবৃত্ত শ্রেণির মানুষ লেপ বেশি ব্যবহার করেন বলে জানান কারিগররা।