বেনাপোল বড়আঁচড়া গ্রামে সোনামনি ওরফে টুনু নামে এক তরুনী ধর্ষনের পর আতœহত্যা করেছে। ধর্ষক রাকিব হাসানের মা রুপালি বেগম মেয়েটিকে গালিগালাজ করার পর সে আতœহত্যা করেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। শুক্রবার রাত ৮ টার সময় এ ঘটনা ঘটে বেনাপোলের বড় আচড়া গ্রামের লিটন এর বাড়িতে।
ধর্ষনের শিকার তরুনী যশোর জেলার মনিরামপুর থানার ময়নুদ্দিনের মেয়ে। সে তার বোনের সাথে ওই গ্রামে লিটনের বাড়িতে ভাড়া থাকত।
ধর্ষনকরা গ্রামের শহিদের ছেলে ভরসা ও তার চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলামের ছেলে রাকিব হোসেন এবং একই থানার গাতিপাড়া গ্রামের সাগর হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন।
স্থানীয়রা বলেন, শুক্রবার বেলা ৪ টার সময় টুনু রাকিবের ডাকে তার চাচাতো ভাই ভরসাদের বাড়িতে যায় জুথি নামে একটি মেয়েকে সাথে নিয়ে। এসময় ওই বাড়িতে ভরসার বাবা মা কেউ ছিল না । টুনু ভরসাদের ঘরে উঠার কিছু সময় পর জুথি ওই বাড়ি থেকে চলে আসে। এরপর টুনুর বড় বোন মর্জিনা বাড়িতে এসে তার বোনকে না পেয়ে পাগলের মত প্রায় ৪০ মিনিট খোজাখুজির পর মেয়েটি বাড়ি আসে। সে কোথায় ছিল তা তার বোন জানতে চাইলে সে বার বার মিথ্যা কথা বলতে থাকে। এক পর্যায় রাকিবের মা রুপালী বেগম এসে মেয়েটিকে মারতে যায়। এবং বলে সে তার ছেলে ও ভাসুরের ছেলে ভরসার সাথে তার ভাসুর শহিদের বাড়িতে সময় কাটিয়েছে।
মেয়েটি লোকলজ্জার ভয়ে রাত ৮ টার দিকে গলায় রশি দিয়ে আতœহত্যা করে। তবে একটি সুত্র দাবি করে বলে মেয়েটি নিজ ইচ্ছায় দারিদ্রতার কারনে অনৈতিক কাজ করে থাকতে পারে।
মেয়েটির বোন মর্জিনা বলেন, তার বোনকে ওরা ফুসলিয়ে নিয়ে জোর করে ধর্ষন করেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে সে তার বোনকে বকাঝকা করলে সে সুযোগ বুঝে গলায় ওড়না পেচিয়ে আতœহত্যা করে।
বাড়ির পাশের আসমা খাতুন বলেন, টুনুর বড় বোন মর্জিনার শিশু সন্তানকে টুনু রাখত এবং মর্জিনা একটি হোটেলে রান্নার কাজ করত। ওই বাচ্চার কান্নার চিৎকারে দৌড়ে এসে জানালা দিয়ে দেখা যায় টুনু গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। তখন জানালা দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে টুনুকে উদ্ধার করে বেনাপোল রজনী ক্লিনিক এরপর নাভারন বুরুজ বাগান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত্যু বলে ঘোষনা করেন।
রাকিবের মা রুপালী বেগমের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে সে তাকে গালাগালি করে নাই বলে জানায় । তবে টুনু ও তার ছেলে সহ আরো দুইজন তার ভাসুরের ঘরে ছিল বলে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে ভরসার পিতা শহিদ হোসেন ও মা বিউটি খাতুন বলেন, আমার ছেলে এ রকম কাজ করতে পারে না। সে গ্রামে একজন ভালো ছেলে হিসাবে পরিচিত। মেডিকেল রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তার ছেলে দোষি কিনা।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভরসা, রাকিব ও সাব্বির পলাতক রয়েছে বলে এলাকাবাসি জানান।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান বলেন, আমরা ধর্ষন হয়েছি কিনা বলতে পারব না। তবে সে গলায় ওড়না জড়িয়ে আতœহত্যা করেছে। তার শারীরীক ও পোষ্ট মর্টেম পরীক্ষার জন্য যশোর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্টে সব জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানার একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।#