পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের কাজ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার রডের বদলে বাঁশ দেওয়া আলোচিত সেই প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে (ইসিএল)। ক্রমান্নয়ে বেড়িয়ে আসছে পাবিপ্রবি’র উপাচার্যের বিভিন্ন অপকর্ম ও দূর্নীতির চিত্র। যা গত কয়েকদিনে পাবনাসহ সারাদেশে উপাচার্যের ঘুষের অডিও ফাসের ঘঁনায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে।
পাবিপ্রবি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভারে অতিরিক্ত পরিচালক এস এম গোলজার হোসেন ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রকল্পে প্রায় ৩ শত কোটি টাকার কনষ্ট্রাকশন কাজ হবে। সেখানে ড্রয়িং, ডিজাইন এবং সেন্টার ডকুমেন্ট তৈরীসহ বিভিন্ন কাজ করবেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এই বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প পরিচালক স্যার এবং নির্বাহী প্রকৌশলী বিস্তারিত বলতে পারবেন বলেও তিনি জানান।
কাজ পাওয়ার জন্যে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান শ্যামলীর একুমেন্ট আর্কিটেক্ট প্লানার লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রায়হান রুবেল বলেন, পাবিপ্রবির ডিপিপি পাশ হওয়ার পর থেকে উপাচার্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘুরে ঘুরে কাজ খোঁজ নিয়ে বিতর্কিত ইসিএলকে কাজ দিয়েছেন। নেগোশিয়েট করে পারসোনালি পারচু করেই কাজটি দিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গার পর কেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে কাজ দিলেন ওই প্রতিষ্ঠানকে আমার বোধগম্য নয়।
তৎকালীন সময়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনাতে কৃষি বিভাগের প্রায় আড়াই কোটি টাকার একটি বিল্ডিং নির্মানে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করায় বিষয়টি সারাদেশে তোলপাড়ের সৃাষ্ট হয়।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল (অব:) জিএম আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে কাজ তো আর আমরা দেই নাই, সিষ্টেমে হয়েছে। পিপিএ-২০০৬ এবং পিপিআর-২০০৮ এর নিয়মানুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে যাচাই বাছাই শেষে কার্যাদেশ পেয়েছে। রডের বদলে বাঁশ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আবেদনকরা আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছেন। মুলত ওই কাজটি তো আর ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড করেন নাই, তারা শুধু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিল। সেখানে তাদেও কোন দোস নেই। তারপরেও উপাচার্য স্যার অনেক যাচাই বাছাই করে তাদের সমস্ত কাগজপত্র দেখেই মুলত ইসিএলকে কাজ দেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান নয় ইসিএল বলেও দাবী করেন তিনি।
এদিকে গত ২৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও বাংলাদেশ ষ্টাডিজ বিভাগে দুইজন শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে এক চাকুরী প্রার্থী উপাচার্যের নিকট ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে একটি অডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরাও ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ১২ দফা দাবীতে লাগাতার আন্দোলনে নামে। সম্প্রতি ২৮ জোড়া বেঞ্চ ক্রয়ে সাড়ে ৬ লক্ষাধিক টাকা ব্যায় দেখানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। যার বিল ভাউচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে।