সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার বাদি ও স্বাক্ষী সহ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের শায়েস্তা করতে দুর্বৃত্ত-হামলাকারীদের সাথে নিয়ে মাঠে নেমেছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় ওসি বজলুর রহমান । তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা-হয়রানীমুলক মামলা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিকদের ফাঁসাতে সমাজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বিতর্কিত এক নারী কে দিয়ে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মঙ্গলবার বিকালে থানায় মামলা রেকর্ড করিয়েছেন ওসি বজলুর রহমান।
মামলায় ডিবিসি নিউজের ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি প্রেসক্লাব সদস্য সাংবাদিক আব্দুর রহমান মিল্টন এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলালাইভের স্টাফ রিপোর্টার শিশু সাংবাদিক রামিম হাসান কে আসামী করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শৈলকুপা প্রেসক্লাব বুধবার এক জরুরী বৈঠক ডেকে অবিলম্বে মিথ্যা, হয়রানী ও ষড়যন্ত্রমুলক মামলা সহ ওসির প্রত্যাহার দাবি করে টানা ৭দিনের আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষনা করেছে।
একই সাথে শৈলকুপা থানার ওসির সকল কর্মকান্ড তদন্তের দাবি তুলেছেন সাংবাদিকরা। প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ৭দিনের ঘোষিত কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ, মানববন্ধন, স্বারকলিপি প্রদান, গনজিডি, কলম বিরতি, অনশন, মুখে কালো কাপড় প্রদর্শন, থানার ইতিবাচক সংবাদ বর্জন । এছাড়া ঘটনার প্রতিবাদে পরের সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে স্বাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোন প্রকার যাচাই-বাছায়, তদন্ত ছাড়াই এমন অভিযোগ মামলা আকারে গ্রহণ করায় জরুরী সভাতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ে দেশের মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শৈলকুপা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বুধবার দুপুরে এই জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাব সভাপতি এম.হাসান মুসা এতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বলা হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শৈলকুপার কৃতি সন্তান ডিবিসি নিউজের ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রহমান মিল্টন সহ সাংবাদিকদের উপর ঝিনাইদহ অফিসে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। সে হামলা মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়ার পর থেকে বাদি আব্দুর রহমান মিল্টন ও স্বাক্ষী রামিম হাসান হামলাকারীদের টার্গেট হয়ে আছে। মামলা উঠিয়ে নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আর এদের যোগসাজসেই শৈলকুপা থানার ওসি বজলুর রহমানের ইন্ধনে তানিয়া নামের এক বিতর্কিত মহিলা গত মাসের ২৭ তারিখে কবিরপুরে প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। তখন তাকে সাংবাদিকরা বের করে দেয়। এরপর সে থানায় যায় এবং ওসির পরামর্শে ২দিন ধরে ৩দফা অভিযোগপত্র কাটাছেড়া করে নারী নির্যাতনের কথিত অভিযোগ আনে। ৫নভেম্বর তারিখে মিথ্যা হয়রানীমুলক মামলা দায়ের করে। আসামী করা হয় সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার বাদী আব্দুর রহমান মিল্টন ও স্বাক্ষী রামিম হাসানের বিরুদ্ধে ।
এছাড়া শৈলকুপা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা আইন-শৃঙ্খলা, অপরাধ সহ বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ লেখায় ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছে ওসি বজলুর রহমান। সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন ওসির হয়রানীমুলক কর্মকান্ডে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছেন তারা এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সভায় অবিলম্বে মিথ্যা মামলা সহ ওসির প্রত্যাহার দাবি করা হয় ।
এসময় শৈলকুপা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আক্তার পলাশ, ডাকুয়া সম্পাদক শামীম বিন সাত্তার, সমকালের সাংবাদিক তাজনুর রহমান, নয়াদিগন্ত ও লোকসমাজের সাংবাদিক মফিজুল ইসলাম, মানবজমিনের ওয়ালি উল্লাহ, দৈনিক যশোরের নোমান পারভেজ,, আমার সংবাদ ও সত্যপাঠের আব্দুল জাব্বার, সমাজের কথার মাসুদুর রহমান, ডাকুয়ার বার্তা প্রধান তুহিন জোয়ার্দ্দার, জনবাণরি শাহজাহান আলী, নতুন দিনের আব্দুল ওহাব, বর্তমান কথার একেএম রেজাউল হাবিব, ভয়েস অব কুষ্টিয়া ও খবরপত্রের চঞ্চল মাহমুদ, দৈনিক নওয়াপাড়ার আবিদুল ইসলাম, সোনালী খবরের আব্দুল মান্নান, ঢাকার ডাকের এসএম আলিমুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এমন মিথ্যা মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঝিনাইদহ-১ শৈলকুপা আসনের সংসদ সদস্য ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ।
এদিকে মামলা প্রসঙ্গে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) বজলুর রহমান জানিয়েছেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এরপর পরবর্তী কার্যক্রম নেয়া হবে ।