আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো দেশে দলীয় সরকার তাদের দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করেছে বলে আমার জানা নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা নিজের দলের লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিরল হয়ে থাকবে।প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন অপরাধ করলে নিজের দলেরও কোনো ছাড় নেই। তিনি সৎ সাহস দেখিয়েছেন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে ফেনী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কানাডার আদালত রায় দিয়েছে যে বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল, তাদের নেতা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে পারে না। বিএনপি নিজেদের দলের কোন লোকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি। আর বিএনপির আমলে দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি।
তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যেই দুর্নীতি করুক, এটা সরকারের নজরে আছে, সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। দুদক আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্যের দুর্নীতি তদন্ত করছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার দলের নেতা ও স্বজনরা তার অসুস্থতার যে চিত্র তুলে ধরেন, চিকিৎসকদের অবজারবেশন তেমন নয়। তারা খালেদার শারিরিক অবস্থা নিয়ে যতটা না উদ্বিগ্ন তার চেয়েও অসুস্থাকে নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। এটা নিয়ে তাদের দুরবিসন্ধি রয়েছে। দু’ বছর হয়ে গেল তিনি কারাগারে বিএনপি খালেদার মুক্তির জন্য চোখে পড়ার মত কোন আন্দেলন করতে পারেন নি। তারা আন্দোলন করে বের করতে পারলে করুক আমার আপত্তি নেই। আদালত থেকে জামিন নিতে হবে চিকিৎসকরা মনে করলে তিনি বিদেশ যেতে পারেন। তারা শুধু হাঁক ডাক দিতে পারে। আন্দোলন করতে পারে না।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার রায় প্রমাণ করে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার হস্তক্ষেপ করে না। আওয়ামীলীগের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মামলার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে ছিলেন। কাদের বলেন, এ মামলায় ১৬ জনের সবার ফাঁসি হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামীলীগের স্থানীয় এক সভাপতিও ছিলেন তাকে চার্জশীট থেকে বাদ দেয়া হয়নি। সেও ফাঁসির রায় পেয়েছে। এ থেকে প্রমাণ হয় অপরাধী যেই হোক তার নিস্তার নেই।
জয়নাল হাজারীর আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হওয়ার আলোচনার ব্যাপারে তিনি বলেন, সুনিদির্ষ্ট ভাবে কিছু বলতে পারছি না, সভাপতি নির্দেশ দিলে সাধারণ সম্পাদকের সাক্ষর সম্বলিত চিঠি যাওয়ার কথা। কিন্তু আমি কোন চিঠি দেয়নি।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তাদের চলে যেতে হবে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, ক্রমাগত বাড়ছে। চায়না এবং ভারত থেকে চাপ আসছে। সব দিক থেকে মায়ানমার সরকার চাপে রয়েছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুমনী আক্তার, ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজী আলা উদ্দিন, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সড়ক ও জনপদ বিভাগের কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান ও নোয়াখালী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুর রহিম প্রমুখ।