প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পারিশ্রমিক বাড়ানোসহ ১১ দফা দাবি নিয়ে প্রথমবারের মতো সব ধরনের আসর থেকে বিরত থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন দেশের ক্রিকেটাররা। আর ধর্মঘটে যাওয়ার ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছেছে। পুরো ঘটনাটি জেনে প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডকে অবিলম্বে খেলোয়াড়দের সাথে বসে তাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের ঘোষণার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বেক্সিমকোর ধানমন্ডির অফিসে বোর্ডের উচ্চপর্যায়ের অনানুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারা উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন।
বৈঠক থেকে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বোর্ডে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন পরিস্থিতি নিয়ে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলতে মঙ্গলবার দুপুরের আগে বোর্ডে যাবেন।
বেক্সিমকো অফিসে বিসিবি কর্তাদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ক্রিকেটারদের এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে।
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা বিস্মিত, হতবাক। তাদের ধারণা—এটা ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, বোর্ডের কাছে লিখিতভাবে কোনো দাবি আকারে পেশ করলেও তা নিয়ে অবশ্যই কথা হতো। কিন্তু তা না করে সরাসরি আলটিমেটাম দেওয়া। আমরাও চাই বিষয়টির মীমাংসা হোক। এজন্যই মঙ্গলবার বোর্ডে বসব আমরা। সেখানেই হয়তো বসে সব কিছু ঠিক হবে।
অন্যদিকে,বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে বিসিবি’র পরিচালক বোর্ডের সদস্য লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্যাসিনো বাণিজ্যের খবর জানার পর প্রধানমন্ত্রী বিবিসির ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। খেলোয়াড়দের অসন্তোষ কেন এতদূর গড়ালো এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে গণমাধ্যমে দাবি গুলো তুলে ধরেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। খেলোয়াড়েরা ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত সব ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বন্ধ! তার মানে, অনিশ্চয়তায় ঝুলে গেল বাংলাদেশের ভারত সফর। আগামী মাসে ভারতের মাঠে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। দুই টেস্টের শেষ ম্যাচ আবার ইডেন গার্ডেনসে।প্রশ্ন উঠেছে সাকিবদের আন্দোলনের প্রভাবে কি ভারত সফরটা অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল কিনা!
এছাড়া যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল মনে করেন, ক্রিকেটাররা ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার আগে পুরো বিষয়টি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানাতে পারতেন। শুরুতে হার্ডলাইনে যাওয়ায় ক্রিকেট দুনিয়ায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে তাঁর অভিমত। তবে ক্রিকেটারদের দাবিদাওয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল মন্ত্রীর আশা, সব সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হবে।