নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে :
রাজশাহীতে থানার পাশেই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে কলেজ ছাত্রী লিজা রহমানের আত্মহননের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) গভীর রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানার লক্ষ্মী নারায়নপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে কলেজছাত্রী লিজা রহমান (১৮) মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় নিহতের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সংখ্যা ও নাম উল্লেখ না করে লিজার শ্বশুর বাড়ির বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। লিজার বাবা আলম মিয়া বাদী হয়ে বুধবার (০২ অক্টোবর) রাতে মহানগরীর শাহ মখদুম থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় তার মেয়েকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আলম মিয়া। এ জন্য লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া শ্বশুর মাহাবুব আলম খোকন ও শাশুড়ি নাজনিন বেগমকে আসামি করা হয়েছে। আর নাম ও সংখ্যা উল্লেখ না করে সাখাওয়াতের ভাই-বোন, ভগ্নিপতিসহ শ্বশুর বাড়ির বেশ কয়েজনকে আসামি করা হয়েছ। শাহ মখদুম থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বণী ইসরাইলকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার এই চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে এ মামলায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রংপুরের গাইবান্ধা জেলার নিজ গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে লিজার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। বুধবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত লিজার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের পর নিজের আগুনে আগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত লিজার মরদেহ বুধবার রাতে দাফনের জন্য গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বুধবার (০২ অক্টোবর) সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। শরীরের ৬৩ শতাংশ দগ্ধ হয়ে ঢামেক’র বার্ন ইউনিটে কলেজ ছাত্রী লিজা এই টানা চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেন।