মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ মনু নদীতে এক শৌখিন মাছ শিকারির জালে ধরা পড়েছে প্রায় ৭০ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছ। মাছটি দেখতে ভিড় করেন অনেকে। শহরের বড়হাট এলাকার বাসিন্দা শিবলু মিয়া বলেন, তিনি শখের বসে প্রায়ই মনু নদীতে মাছ ধরতে জাল ফেলেন। রিটা, ছোট বাঘাইড়, আইড়, লাছোসহ বিভিন্ন জাতের রুপোলি মাছ জালে ধরা পরে। সন্ধ্যারাতে অন্যদিনের মতোই জাল ফেলেছিলেন নদীতে। জালে ওঠেছিলো বিভিন্ন জাতের মাছ। মধ্যরাতে টের পেলেন জালে বড় ধরনের কিছু আটকা পড়েছে। প্রথমে ভেবেছিলেন কাঠ বা পাথরখন্ড হতে পারে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর নড়াচড়ায় টের পান জালে আটকা পড়েছে বিশাল আকারের মাছ। কয়েকজনকে নিয়ে জাল টেনে নৌকার ওপর তোলার পর দেখতে পান বিশাল বাঘাইড় মাছ ধরা পড়েছে। মাছটির ওজন ৫৯ কেজি ৩০০ গ্রাম। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মনু নদীতে ধরা পড়েছে বিশাল আকারের মাছ, খবর পেয়ে রাতে ভিড় জমান এলাকার উৎসাহি মানুষজন। দেখা যায় সবার মধ্যে এক ধরনের আনন্দ-উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুধু বড়হাট এলাকা নয়, মৌলভীবাজার শহরের মানুষদের মধ্যেও মনু নদীতে বড় আকারের বাঘাইড় মাছ ধরা পড়ার খবরে আনন্দের ঝিলিক বইতে দেখা গেছে। বড়হাট এলাকার তরুণ মাজহারুল ইসলাম রাব্বি বলেন, ‘এতো বড় মাছ আগে দেখিনি। বাড়ির পাশে নদীতে বিশাল আকারের মাছ ধরে পড়েছে দেখে অভিভূত। এলাকার পুরো মানুষ বিমোহিত’, জানান তিনি। শনিবার সকালে প্রতি কেজি ৯০০টাকা দরে এক ব্যবসায়ীর কাছে মাছটি বিক্রি করে দেন তিনি। কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ। বাঘাইড় মাছ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাঘাইড় বা বাঘ মাছ বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এরা স্বাদু পানির মাছ। স্বাদু পানি থেকে স্বাদু পানিতে অভিপ্রয়াণ করে। বড় বড় নদী বা প্রবাহ অঞ্চল এবং হ্র্রদের তীব্র স্রোতযুক্ত নুড়িময় তলদেশে বসবাস করে। বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিতাস, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলি এবং কংশ এদের প্রধান আবাসস্থল। বাঘাইড় রাক্ষুসে মাছ; ছোট ছোট মাছ, জলজ আগাছা ও পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে। সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ২০০ সেন্টিমিটার এবং ২০০ পাউন্ডের বেশি ওজন হতে পারে। বর্ষার শুরুতে এরা ডিম পাড়ে। কিছু বড় অনিয়মিত ডোরা ও চিহ্নসহ দেহের রঙ হালকা হলুদ।