নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির হিড়িক পড়েছে। গত সাত দিনে এ উপজেলায় একটি ট্রান্সফরমার ও দশটি শিল্প মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। মিটার পাবে উল্লেখ করে একটি মোবাইল নম্বর লিখে রেখে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করেছে দূর্বৃত্তরা। এতে চাতাল মালিক, শিল্প গ্রাহক ও সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত শুক্রবার উপজেলার রামানন্দখাজুরা ইউনিয়নের বসন্তপুরে গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এদিকে ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় মাঠের ১৬০ বিঘা জমির ধানের চারা বেড়ে ওঠা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে শতাধিক কৃষক রোপণ করা ধানের জমিতে সেচ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন।
সিংড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার জামতলী বাজার এলাকার একটি ‘স’ মিল থেকে দুটি মিটার চুরির ঘটনা ঘটে। মিটার পাবে একটি কাগজের চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে যায়। পৌর শহরের পাটকোল মহল্লার মা রাইচ মিল, ফরিদা রাইচ মিল, মামুন রাইচ মিল, মায়া রাইচ মিল ও বাসস্ট্যান্ড এলাকার চারটি বরফ মিল ও ‘স’ মিল থেকে একই কায়দায় চিরকুট লিখে রাতের যে কোন এক সময় মিটার চুরি করে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। আর মিটার চুরি যাওয়া স্থান থেকে প্রাপ্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে দশ থেকে পনের হাজার টাকা বিকাশ করলে চুরির মিটার ফেরত দেয়া হবে বলে জানায় দুর্বৃত্তরা। পরে বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলে তাদের কিছুই করার নেই বলে জানান কর্তৃপক্ষ। আর মিটারের সমপরিমাণ টাকা জমা দিলেই লাগানো হবে নতুন মিটার। তবে অনেকেই আবার তাদের কথা মতো বিকাশ নম্বরে টাকা দিয়ে মিটার ফেরতও পাচ্ছে। এতে করে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মিল মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘আমাদের মিটারের কোন নিরাপত্তা নেই। এভাবে মিটার চুরি হতে থাকলে আমাদের ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হবে।’
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ সিংড়া জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মিজানুর রহমান বলেন, মিটার চুরি হওয়ায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। গত সাত দিনে উপজেলার দশটি শিল্প মিটার চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পক্ষ থেকে সিংড়া থানায় একটি লিখিত এফআইআর করা হয়েছে।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি কে বা কাহারা এ কাজ করতে পারে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে, শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।