পাবনা প্রতিনিধি :
পাবনায় তিন সন্তানের জননীকে দু’দফায় গণর্ধষণের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলেন, ধর্ষণ মামলার ১ নং আসামি রাসেল ও ৪ নং আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টু।
বুধবার পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি থেকে শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টুকে ও মঙ্গলবার বিকেলে রাসেলকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার।
গৃবধূর মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের যশোদল গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেলের সাথে তিন সন্তানের জননী ওই গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই জের ধরে ২৯ আগস্ট রাতে প্রেমের টানে রাসেলের সাথে ঘর থেকে বের হয়ে যান ওই গৃহবধূ। রাসেল ওই গৃবধূকে জনৈক ওসমানের কাছে নিয়ে যান। সেখানে রাসেল, ওসমান ও হোসেন ড্রাইভার মিলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ঘটনার মিমাংসার জন্য ওই গৃহবধূ স্থানীয় মাতব্বর শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টুর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে যান। এ সময় ঘন্টু ও তার সহযোগি সঞ্জু ওই অফিস কক্ষে আটকে রেখে তিনদিন ধরে একাধিকবার ধর্ষণ করে। অভিযোগে গৃহবধূ দাবি করেন, ঘন্টু ও সঞ্জু তাকে একাধিকবার পালা করে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম করার পরিকল্পনা করছিল। বিষয়টি তিনি বুঝতে পেরে সুকৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যান। অসুস্থ অবস্থায় ৫ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূর বাবা তাকে গুরুতর অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা ওই গৃহবধূর বাবা মেয়ের মুখ থেকে সব কথা শোনার পর ওই রাতেই পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর যশোদল গ্রামের আলী আকবরের ছেলে রাসেল , গাতী গ্রামের হোসেন ড্রাইভার পিতা- অজ্ঞাত, গাতী সাতমাইল গ্রামের ফজলুর ছেলে ওসমান আলী, রানীগ্রামের সিরাজ মাস্টারের ছেলে দাপুনিয়া ইউনিয়নের আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টু ও ফলিয়া গ্রামের কালামের ছেলে সঞ্জুকে আসামী করে পাবনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু পুলিশ ওই অভিযোগ আমলে না নিয়ে ধর্ষিতা ও ধর্ষণের অভিযুক্ত রাসেলের সাথে ৫ সেপ্টেম্বর রাতেই পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হক জোরপূর্বক বিয়ে দিয়ে দেন থানার ভেতরে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হন ওসি। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর অবশেষে জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি মামলা হিসেবে গ্রহণের নিদের্শ দেন এবং ঘটনার তদন্তে জেলার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়াটার) ফিরোজ আহমেদকে প্রধান এবং কোর্ট ইন্সপেক্টর ও ডিআই-১ কে সদস্য করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অন্যদিকে পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়। মঙ্গলবার বিকেলে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম-পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ ও ধর্ষণের আলামত উদ্ধার করেছেন।
বুধবার পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম-পিপিএম জানান, মামলার আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে ঘন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এর আগে মঙ্গলবার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মামলার প্রধান আসামি রাসেলকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার মূল উদঘাটন করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পুলিশ কাজ করছে।