ডেস্ক রিপোর্ট :
২০০১ সালে ১ অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। সেই সময় চার দলীয় জোটের ক্যাডারদের তান্ডবলীলায় চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা বরিশালের আগৈলঝাড়ায় প্রথম হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিক অপূর্ব লাল সরকার। তিনি ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। এ কারণেই স্থানীয় বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে তার (অপূর্ব লাল সরকার) একমাত্র ভাল ডান পা ভেঙ্গে দিয়েছে। তার বাম পা ছোটবেলা থেকেই টাইফয়েড জ্বরে পঙ্গু। চিকিৎসার জন্য নিজ দল থেকেও তিনি পাননি কোন সুযোগ সুবিধা। ফলে উন্নত চিকিৎসার অভাবে চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন জাতীয় দৈনিক ‘সংবাদ’ পত্রিকার আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অপূর্ব লাল সরকার।
বিগত ১৯ বছর ধরে ঘুরে ফিরে সেপ্টেম্বর মাস আসলেই দু:সহ দিনের বিশাদের কালো অধ্যায় তাকে তাড়া করে। এবছর সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখ দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডিতে সাংবাদিক অপূর্ব লাল সরকার হৃদয়বিদারক একটি পোস্ট করেছেন। অসংখ্য ব্যক্তি তার এই পোস্ট পড়ে সান্তনামূলক নানা কমেন্টও করেছেন। তার পোস্টের উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ তুলে ধরা হলো, “আমার দল পরপর তিনবার ক্ষমতায় এলেও আজ পর্যন্ত কোন মূল্যায়ন পাইনি। পারিনি ন্যুণতম বেঁচে থাকার মতো কোন উপার্জনের পথে যেতে। অথচ অনেকে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হলেও আমার মতো হতভাগার কপালে দু’টাকার সহায়তাও জোটেনি। আমার মতো একটা পঙ্গু মানুষকে উপহাস করে যারা উপরে ওঠার ধান্ধায় আছে সেটা কি তাদের চিরদিন থাকবে? আজ তেলওয়ালা সুবিধাভোগীরা বলে বেড়ায়- আমি নাকি আওয়ামী লীগের কেউ না। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন- তাহলে ওই সময় (২০০১ সালে) চারদলীয় জোটের ক্যাডার ও সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আমার পা ভেঙে দিয়েছিলো কেন? ওইসময় সারাদেশে দু’শো আসনের টার্গেট নিয়ে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় হামলা-নির্যাতন চালানোর চারদলীয় জোটের নীলনকশা অনুসারে আগৈলঝাড়ার সংখ্যালঘুদের উপর এসব হামলা-নির্যাতন সংঘটিত হয়েছিল। যার প্রথম শিকার ছিলাম আমি। তাও এক দলবদলকারী স্বার্থান্বেষী নেতার ইঙ্গিতে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অপূর্ব লাল সরকার জানান, অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেন দল থেকে আমি কত করে সহায়তা পাই? বিষয়টি সম্পর্কে আমার ধারণা না থাকলেও অনেকের কাছে শুনেছি দল থেকে ২০০১’র নির্যাতিত-পঙ্গু নেতাকর্মীদের নিয়মিত হারে আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তা করা হয়। অথচ আমি এসবের কিছুই জানিনা। আর কিছু প্রত্যাশা না করে দলের কাছে তিনি তার কর্মময় জীবন এবং যৌবনের ১৯টি বছর ফেরৎ চেয়েছেন।