ব্যাঙ্গালোর গমন

আমিরুল ইসলাম রাঙা।
আমাদের দেশের মানুষের কাছে ব্যাঙ্গালোর অতি পরিচিত একটি নাম। ভারতের প্রসিদ্ধ একটি শহর। কর্নাটকের রাজধানী। কলকাতা থেকে দুই হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ -পশ্চিমে অবস্থিত । ভারতের আধুনিক ও উন্নতমানের সৌন্দর্যমন্ডিত শহর। আইটি সিটি, শিক্ষানগরী ও বানিজ্যিক শহর হিসেবে পরিচিত হলেও আমাদের দেশের মানুষের কাছে মুলতঃ চিকিৎসার জন্য বেশী পরিচিতি। এখানেই সেই হার্টের বিশ্ববিখ্যাত ডাক্তার দেবী শেঠির নারায়ন হৃদয়ালয় হাসপাতাল।

সমগ্র ভারতবর্ষ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা মহাদেশ আর আমাদের বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসার জন্যে এই ব্যাঙ্গালোর নগরে ছুটে যায়।তবে চিকিৎসার বাইরে আরেকটি বড় অংশ যায় লেখাপড়ার জন্য। এই ব্যাঙ্গালোর শহর নিয়ে আমাদের দেশের বহু মানুষের আগ্রহ,প্রয়োজন আর কৌতূহল। যেটা ছোটবেলা থেকে আমার মাঝে ও ছিল। যেসব মানুষের জীবনে প্রথম ভারত যাওয়া –ভাল করে ঢাকা শহর না চেনা এমন মানুষের ব্যাঙ্গালোর যাওয়ার বর্ননা অবাক বিস্ময়ে শুনেছি। আর সেই স্বপ্নের ব্যাঙ্গালোর যাবার সুযোগ আমার জীবনেও পেলাম।

আশাকরি পাঠক এই লেখাটি পড়লে ভাল লাগবে। আমার নিজের চিকিৎসার প্রয়োজনে ২০১৩ সালে ব্যাঙ্গালোর যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। সাথে গাইড হিসেবে নিলাম বন্ধু আল মাহমুদ নিটুকে ( পাবনা জেলা জাসদের সহ সভাপতি) । ৮ ই জানুয়ারী ভয়ানক শীতের মধ্য যাত্রা করলাম। বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে যেতে হবে। আমরা পাবনা থেকে সাতক্ষীরা গামী আশির্বাদ বাসে চড়ে নাভারন গিয়ে নামলাম। তারপর এক সিএনজি নিয়ে বেনাপোল বর্ডারে পৌছালাম। সেখানে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার। ইনচার্জ খোকা আমার বাল্যবন্ধু । ওকে আগেই বলা ছিল। আমরা পৌছানোর পর খোকা যথারীতি পারাপার, মুদ্রা বিনিময় সহ ওপারে পেট্রোপলে গিয়ে গাড়ী ঠিক করে কলকাতা যাত্রার সকল ব্যবস্থা এমনভাবে করলো যে, মনেই হলোনা এক দেশ থেকে আরেক দেশে এলাম। পেট্রোপল থেকে কলকাতা বাসভাড়া (এসি) জনপ্রতি ২৫০ টাকা, ট্রেন ভাড়া ১৮ টাকা হলেও আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম টেক্সীতে যাবার। কারন আমাদের কাছে অনেক টাকা ছিল। এছাড়া বিকালবেলা ব্রেকজার্নি করা ঠিক হবেনা মনে করে ১২শত টাকায় টেক্সী রিজার্ভ করে কলকাতার মারকিউস রোডে শ্যামলী পরিবহনের নিজস্ব হোটেল সম্রাটে পৌছালাম সন্ধ্যার পর। আটশত টাকা (এসি) ভাড়ায় ডবল বেডের রুম নিলাম । শ্যামলী পরিবহনের মালিক গনেশদার ছোটভাই, চাচাতো ভাই এবং ওদের সল্টলেক কাউন্টারের ইনচার্জ জিতু (পাবনার শালগাড়ীয়ার
ছেলে) এর সাথে কথা হলো। কলকাতায় বসবাসরত আমার প্রিয় বন্ধু অনুদা ( এডভোকেট) কে ফোন করলাম। পাবনা থেকে রওয়ানা হবার আগেই তাদের জানিয়ে রেখেছিলাম। অনুদা কলকাতার বাইরে। ফিরতে দুইদিন দেরী হবে। ব্যাঙ্গালোর থেকে ফিরে আসার পর দেখা হবে। পরেরদিন ট্রাভেল এজেন্ট
দের সাথে যোগাযোগ করে ব্যাঙ্গালোর যাত্রার ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করলাম।

কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোর যাওয়া ট্রেনের মধ্যে সবচাইতে বেশী জনপ্রিয় হলো দুরন্ত এক্সপ্রেস ট্রেন। দ্রুতগতির এই ট্রেনে সময় লাগবে ২৯ ঘন্টা। দুই হাজার কিলোমিটার পথে ৩/৪ টি ষ্টেশনে বিরতি। স্লিপিং সিট, বিছানাপত্র এবং চা -নাস্তা -খাবার দাবার সহ জনপ্রতি ভাড়া ১২শত (প্রকৃত ভাড়া ৬৫০/টাকা)।
১০ জানুয়ারী সকাল ১১টায় হাওড়া ষ্টেশন থেকে ছেড়ে পরেরদিন বিকাল ৪টায় ব্যাঙ্গালোর পৌছাবে। যাই হোক ৯ জানুয়ারী একদিন হাতে সময় পেলাম। ২৮ বছর পর কলকাতা এসে অবাক হয়ে পরিবর্তন টুকু দেখছি। একসময়ের নোংড়া আর ঘিঞ্জি কলকাতা এখন সুন্দর শহর। চেনা কলকাতাকে অচেনা মনে হচ্ছে।
৯ই জানুয়ারী নিটুকে সাথে নিয়ে কলকাতা দর্শনে বের হলাম। মানুষ টানা রিক্সা,শতবর্ষী ট্রামগাড়ী আর মেট্রোরেলে ( পাতাল রেলে) সারাদিন কলকাতা
নগরী চষে বেড়ালাম।

আমরা আছি মধ্যে কলকাতার এক প্রসিদ্ধ এলাকায়। মারকিউস রোড,মির্জা গালিব রোড,টিপু সুলতান রোড,ফ্রি স্কুল ষ্ট্রীট, পার্ক ষ্ট্রীট, নিউ মার্কেট, ধর্মতলাসহ এক বিরাট এলাকা উর্দ্দুভাষী মুসলিমদের দখলে!! হোটেল রেস্তোরাঁ, দোকান সব তাদের দখলে। হোটেলে বিভিন্ন পদে গুরুর মাংশ রান্না, আর চারদিক থেকে উর্দ্দু -কাওয়ালী গান শুনে মনেই হবেনা এটা হিন্দুস্থান? এই এলাকায় হিন্দু এবং বাঙালী দুটোই
সংখ্যালঘু । যে কারো মনে হবে, এ যেন হিন্দুস্তানের মধ্যে এক টুকরা পাকিস্তান। রাতে আশেপাশের এলাকা ঘুরে এক বিহারী হোটেলে খেলাম। এরপর থাকার হোটেলে ফিরে এলাম।

পরেরদিন সকাল ৯টার দিকে হোটেল থেকে বের হয়ে হাওড়া ষ্টেশনে রওয়ানা হলাম। ১২০ টাকায় এক টেক্সীভাড়া করে আধাঘন্টার মধ্যে ষ্টেশনে পৌছালাম।
বিশাল ষ্টেশন আর হাজার হাজার মানুষ। এখান থেকেই গোটা ভারতের দুরপাল্লার সকল ট্রেন চলাচল করে। আমরা ব্যাঙ্গালোর গামী দুরন্ত এক্সপ্রেসের
নির্ধারিত প্লাটফরমে অপেক্ষা করতে থাকলাম।
নির্ধারিত সময়ের আধাঘন্টা আগে ট্রেন প্লাটফরমে এসে দাড়ানোর পর বাইরে সকল যাত্রীর তালিকা টাঙ্গানো হলো। তালিকা মোতাবেক নিদিষ্ট বগীর নিদ্ধারিত আসনে যাওয়া হলো। প্রতিটি বগীর মধ্যে কেবিন কেবিনে ছয়জনের সিট। দুই সারিতে ছয়জন। আমাদের কেবিনে ছয়জনই বিদেশী। আমরা দুই বাংলাদেশীর সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার দুই ছেলে, আমেরিকা প্রবাসী তাইওয়ানের এক ছেলে এবং জার্মানের এক মেয়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ছয়জন আপন এবং বন্ধু হয়ে গেলাম। বিরাট লম্বা ট্রেনের সামনে পিছনে কিছু দেখা যাচ্ছেনা। ট্রেনের ভিতরে খুব সুন্দর ও পরিস্কার। ঘড়ি ধরে ঠিক ১১টায় ট্রেনের যাত্রা শুরু হলো।

ট্রেন ছাড়ার ১০ মিনিটের মধ্যে প্রত্যেক যাত্রীকে দুই বোতল পানি, চাদর,কম্বল আর বালিশ দেওয়া হলো। যাত্রী কেমন খাবার দুইদিন খাবেন সে তালিকা করে নিল। আধাঘন্টার মধ্যে হালকা নাস্তা আর চা দেওয়া হলো। বেলা ১টায় প্লাটিকের ট্রেতে চাহিদা মত খাবার দেওয়া হলো। আমিষ আর নিরামিষ। আমরা নিরামিষভোজী। ট্রেনের নাম যেমন দুরন্ত তেমন খাবারের মান দুর্দান্ত !! দুপুরের খাওয়া শেষ করলাম। ট্রেন চলছে – ট্রেনের গতি যেমন বাড়ছে -তেমন গল্পের গতি বাড়ছে। প্রধান আলোচক জার্মান মহিলা আর নিটু। তাইওয়ানী কোনমতে দুই/একটা কথা বললেও কোরিয়ান দুজন আর আমি একবারে বোবা। জার্মানি মহিলা পিএইচডি করা গবেষক আর নিটুতো অলরাউন্ডার। নিটু ইংরেজি,হিন্দি, বাংলা সব ভাষায় পারদর্শী। ওরা গল্প করে যেমন মজা পাচ্ছে আমি জানালার পাশে বসে বাংলা বিহার উড়িষ্যা দেখার জন্য উদগ্রীব । প্রায় সন্ধ্যার আগে ট্রেন উড়িষ্যার রাজধানী ভুবেনশ্বর এসে থামলো। পশ্চিম বাংলার সীমানা ছাড়ার পর ডানে বিহার ঝাড়খন্ড ছেড়ে উড়িষ্যা রাজ্যে ঢোকার পরই সাগরের পাশ দিয়ে ট্রেন চলছে। সে এক অপরুপ দৃশ্য। ভুবেনশ্বর ছাড়ার পর রাত নেমে এলে। ট্রেন বিরতিহীন ছুটে চলছে। উড়িষ্যা,অন্ধপ্রদেশ,তামিলনাড়ু ভেদ করে ট্রেন ব্যাঙ্গালোর পৌছাবে পরেরদিন বিকাল চারটায়। সারারাত ট্রেন চলার পর ভোরের আকাশে যখন সুর্য্য উদয় হলো -আবার ছোট মানুষের মত জানালার পাশে বসে অপরুপ সৌন্দর্যতা উপভোগ করতে থাকলাম। দুইপাশে পাহাড় আর পাহাড়। এ পাহাড় এক বিচিত্র পাহাড়। খন্ড খন্ড পাথরের স্তুপ আকাশ ছোয়া। আমি এভারেষ্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা ,হিমালয় পর্বত দেখেছি কিন্তু এমন বিচিত্র পাহাড় প্রথম দেখছি। যাচ্ছি, দেখছি আর ভাবছি। সকাল হলো দুপুর হলো। ভোরে পেপার দিলো,নাস্তা দিলো, ১টায় দুপুরের খাবার। সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে আর আমরা দ্রুত ব্যাঙ্গালোর শহরের কাছে পৌছে যাচ্ছি। প্রায় ঘন্টাব্যাপী শহর ভেদ করে ট্রেন যখন থামলো তখন
ঘড়ির কাটা ঠিক চারটা।

দুইদিন ধরে দুই হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ট্রেন দুই মিনিটও লেট হলোনা। নতুন শহর দেখে যতটুকু অবাক হলাম, যথাসময়ে পৌছানো কম অবাকের নয়। আমরা নামলাম যশোবন্তপুর ষ্টেশন। ইংরেজিতে বলে YESWANTPUR. সেখান থেকে দেবীশেঠীর হসপিটাল আরো ৪০ কিলোমিটার দুরে। ৫০০টাকায় সিএনজি ভাড়া করে আরো দুইঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে সন্ধ্যার পর দেবীশেঠীর নারায়ন হৃদয়ালয় হসপিটালে পৌছি। রিসিপশনের সহযোগীতায় হাসপাতালের দক্ষিনে এক রেষ্টহাউস ভাড়া করলাম। দুইরুম ,দুইবাথ, রান্নাঘর, গ্যাস সিলিন্ডার, হাড়ি পাতিল সহ প্রতিদিন ভাড়া ৪ শত টাকা।

রান্না করার ব্যবস্থা থাকলেও আমরা বাইরে হোটেলে খেতাম। পরেরদিন হসপিটালে ৪শত টাকায়
নিবন্ধন করার পর শুরু হলো চিকিৎসা।পুর্বের ফাইল, ব্যবহৃত ঔষধের তালিকা করে ছোটখাটো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ছোট মাঝারী বড় ডাক্তার হয়ে দেবীশেঠীর কাছে পৌছালাম তিনদিন পরে। উনাকে ভারতীয়রা ভালবেসে ভগবান দেবীশেঠী বলে। উনাকে দেখলেই নাকি অর্ধেক রোগ ভাল হয়। আমি ১১দিন ছিলাম। তিনবার শেঠীর সাক্ষাত পেয়েছি। প্রতি
বার পরীক্ষা নিরীক্ষা করাচ্ছে। কোন প্রয়োজন না থাকলেও এনজিও গ্রামের মত জটিল পরীক্ষা করে যখন ৪০ হাজারের উপর ভারতীয় টাকা খরচ করানোর পর বললো আপনার কোন রোগ ধরা পড়ছেনা। তখন আমার হার্টের রোগ মাথায় ! পরিশেষে ১৪হাজার টাকার আরো একটি পরীক্ষা করার কথা বললে আমি বিনয়ের সাথে প্রত্যাখান করি। আমার কাছে টাকা নাই বলার পরও নানাভাবে টালবাহানা শুরু করলে আমরা হুমকি দিতে বাধ্য হলাম। দ্রুত ফাইলপত্র ফেরত সহ ছাড়পত্র না দিলে পুলিশকে জানানো বলে হুমকি দিলাম । তারপর কাগজপত্র ফেরত দেওয়া হয়। ব্যাঙ্গালোরে ১১দিনের অবস্থানে অবাক করার মত বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। যাবার দুইদিন পর পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবু’র সাথে দেখা। উনি ভাবীসহ গিয়েছেন। উনি একাধিকবার এসেছেন এবং এই হসপিটালে হার্টের বাইপাশ অপারেশন করিয়েছেন। আমরা বেশ কয়েকদিন একসঙ্গে ছিলাম। আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ফেরার আগেরদিন ট্রাভেল এজেন্টের কাছে ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে ঘটনা হলো দুইদিন পরের টিকিট আছে। এসি নিলে পরেরদিনের টিকিট পাওয়া যাবে। দুইজনের ভাড়া ৪৪ শত টাকা। আমরা দুইদিন দেরী না করে এসির টিকিট কাটায় রাজী হলাম। টাকা পরিশোধের পর এজেন্ট দেখে পাসপোর্টে আমার বয়স ৬০ বছর ২৪ দিন। তারমানে আমি ৪০%ভাগ ভাড়া রেয়াত পাবো। সেখানে ১২ বছরের নীচে আর ৬০ বছরের উর্ধে বয়সীদের এই সুবিধা। এরপর বাড়তি টাকা ফেরত দিয়ে দিল।

যথারীতি ২২ শে জানুয়ারী সকাল ১১টায় ব্যাঙ্গালোর থেকে রওয়ানা দিয়ে পরেরদিন বিকাল ৪টায় কলকাতার হাওড়ায় পৌছালাম। এবার এসে মারকিউস রোডে হোটেল সম্রাটের সামনে টুয়েন্টি ওয়ানে উঠলাম। ২৪ আর ২৫ শে জানুয়ারী দুইদিন বাড়তি অবস্থান করলাম। অনুদা এবং তার বন্ধু অরুপ রায় টিটো দাদাদের সাথে কলকাতা ঘুরে বেড়ালাম। ২৫ শে জানুয়ারী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। উল্লেখ্যযে ইন্ডিয়া যাত্রার আগে থেকেই বড় ভাই বলেছিলো কলকাতার মানিকতলায় হযরত ফতে আলী ( রঃ) এর মাজার শরীফ যেন জিয়ারত করি। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী দিন ছিল শুক্রবার। অনুদা ও টিটোদা গাড়ী নিয়ে হোটেলে এসে আমাদের নিয়ে মানিকতলায় গেলেন। সেখানে পৌছানোর পর মাজারের মোতায়াল্লী আমাদের আন্তরিকভাবে বরন করলেন। ফুরাফুরা শরীফের পীরদের বংশধর মোতায়াল্লী সাহেব যখন জানলেন আমাদের বাড়ী বাংলাদেশের পাবনায় তখন আন্তরিকতার পরিমাণ বেশী হলো। উনি পাবনায় বহুবার এসেছেন।পাবনা শহরের পৈলানপুর ও পাকশীর খানকা শরীফে বহুবার এসেছেন। আমি আর নিটু মাজার শরীফের মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়লাম। নামাজ শেষে মাজার জিয়ারত করে অনুদার সাথে বের হলাম। কলকাতার নগর ভেদ করে গঙ্গার নুতন ব্রীজ পার হয়ে হাওড়া জেলায় ঢুকে পড়লাম। দিল্লীর হাইওয়ে ধরে চলার পর যাত্রাবিরতি। হাইওয়ের পাশে গড়ে উঠা এক হোটেলে খাওয়া দাওয়া করলাম। কিছু সময় বিশ্রাম করলাম। আবার কলকাতা অভিমুখে ফেরত যাত্রা। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। বিকাল – সন্ধ্যা – রাত। সকাল হলেই বাংলাদেশ যাত্রা। রাতে অনুদা, টিটোদা সহ আবার হোটেলে। রাত ১০ টার দিকে উনারা বিদায় নিলেন । পরেরদিন ভোর ৬ টায় কলকাতা থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনে উঠে ৯ টার দিকে পেট্রোপল পৌছালাম। বর্ডারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ঐ একই বাসে যশোর নামলাম সাড়ে ১২টায়। এরপর পাবনাগামী বাসে চড়ে বিকাল ৫ টার দিকে
বাড়ী পৌছালাম। শেষ হলো ১৮ দিনের ব্যাঙ্গালোর গমনের ইতিহাস।।
সমাপ্ত।

লেখক পরিচিতি –

আমিরুল ইসলাম রাঙা
রাধানগর মজুমদার পাড়া
পাবনা