পুতির মালায় অনন্যা

সেদিন এক বিয়েতে গিয়েছিলাম। বিয়েতে যেয়েই প্রথমে যে জিনিসটা আমার নজর কারলো সেটা হলো এক বিবাহিত অল্পবয়সী মেয়েকে দেখলাম এক ভারী কাতান শাড়ী পড়েছেন আর অনেক ভারী ভারী গহনা তে নিজের শরীরের একেবারে বারোটা বাজিয়ে রেখেছেন।

একদিকে প্রচণ্ড গরম সাথে উনার ভারী শাড়ী আর এত্ত জম্পেস গহনা দেখে আমার কেমন যেন অস্বস্তি শুরু হয়ে গেলো। অপরদিকে আরেকজন মধ্যবয়সী আন্টিকে দেখলাম ফ্লোরাল প্রিন্টের একটা জর্জেট সিম্পল শাড়ী আর সাথে গলায় এক লহর পুতির মালা পরে এসেছেন।ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না ওই আন্টিকে কতটা স্নিগ্ধ আর সতেজ লাগছিলো।

শুধু আমি না বিয়ের অনুষ্ঠানে আগত অতিথি দের সবাই প্রায় ঘুরেফিরে ওই আন্টির স্নিগ্ধতাটুকু প্রাণ ভরে উপভোগ করছিলেন। একটা সময় আমাদের দাদী নানীরা কোন অনুষ্ঠানে গেলে সবার আগে নিজের সোনার গহনা আর সবচেয়ে ভারী শাড়ী টা বের করতে ভালোবাসতেন। এখন কিন্তু সেই মেন্টালিটি থেকে আমরা প্রায় অনেকেই বের হয়ে এসেছি। পারতপক্ষে নিজের বিয়ে আর বৌভাত ছাড়া কেউ এখন আর ভারী ভারী গাবদা ডিজেইনের সোনা বা রুপার গহনা পড়তেই চায় না বলতে গেলে।

আর তাই আজকালকার এইসব ফ্যাশন সচেতন নারীদের জন্যই এইসব বিডস বা পুতির গহনা এক অনন্য আনুষঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুতির মালা বা পুতির গহনা খুব সহজলভ্য, ইজিলি ক্যারি করা যায় এবং সর্বোপরি যে কোন হাল ফ্যাশনের বা ক্লাসিকাল ড্রেসের সাথেও সুন্দরভাবে মানিয়ে যায়। নিউমার্কেট, চাঁদনিচক,আজিজ সুপার বা উত্তরাতে বিভিন্ন শপিং সেন্টারে বিভিন্নধরনের পুতির মালা বা গহনা পাওয়া যায়,পছন্দ মত কিনে নেওয়া যায় নিজেরা যেয়ে।

চাইলে ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে অথবা ড্রেসের এন্টি কন্ট্রাস্ট কোন কালারের পুতির মালা যা ইচ্ছা নিয়ে নেওয়া যায়। সাধারণত পুতির মালা পরার ক্ষেত্রে নীচের এই দুইটা সিম্পল ব্যাপার অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন-

যদি ড্রেস টা কিছুটা গর্জিয়াস পরেন তাহলে শুধু সিম্পল এক দু লহরের পুতির মালা গলায় দিবেন। আবার যদি হালকা পাতলা ডিজাইনের ড্রেস পরেন তাহলে সাথে কয়েক লহরের ভারী পুতির মালা গলায় পরবেন এবং হাতে একটা পুতির ব্রেসলেট ও পরে নিতে পারবেন সাথে।

বিভিন্ন ধরনের পুতির মালা পাওয়া যায় মার্কেটে,যেমন কাঠের পুতি, মাটির পুতি অথবা প্লাস্টিকের পুতির মালা।ইদানীং আবার সুতো অথবা পাটের তন্তু দিয়েও বানানো হচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের নজর কাড়া সব পুতির মালা।

আবার পুতির সাথে কাচ, স্টোন ইত্যাদির ফিউশন করেও কিন্তু মালা বানানো হচ্ছে। অনেকে আবার পার্ল বিডস বা মুক্তোর মালা ও খুব পছন্দ করেন শিফন শাড়ীর সাথে,কারুর যদি অরজিনাল মুক্তো কেনার সামর্থ্য না থাকে তাহলে হাইব্রিড বিভিন্ন আর্টিফিশিয়াল মুক্তো কিনেও মালা তৈরী করে নিতে পারেন।

আবার বাজারে বিশেষ ধরনের এক পুতির মালা পাওয়া যায়,দোকানীরা যাকে ফিনল্যান্ডের পুতির মালা বলে দেখতে অনেকটা কালারফুল ছোট বড় পয়সা বা ডলারের মতন।আপনি।চাইলে কিন্তু এই মালা টা ও আপনার গেট আপে আলাদা এক ব্যাক্তিত্বের অনুযোগ ঘটাতে পারে।

পরিশেষে, এক গাদা ভারী ডিজাইনের ভারী গহনা পরলেই কেবল আপনার ফ্যাশন বৈচিত্র‍্যের বিকাশ ঘটালো ব্যাপার টা আসলে তা কিন্তু নয়।
বরং সিম্পল একটা ড্রেসের সাথে বৈচিত্র্যপুর্ন এক পুথির মালা পরেই দেখেন কতটা অনন্যা হয়ে গেছেন সবার কাছে। তো আজকেই চলে যান মার্কেটে আর কিনে নিন আপনার পছন্দের হরেক রকম পুতির মালা।