নাটোর প্রতিনিধি
রোগীনির ছদ্ম নাম রাবেয়া খাতুন। বয়স ৫৫ বছর। বাড়ি সিংড়া উপজেলায়। দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কয়েক বছর আগে। জামাতা ও নাতি-নাতনি সহ বিশাল এক পরিবারের গৃহকর্তী তিনি। নারী জনিত শারীরীক সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি শহরের একতা ক্লিনিকের মালিক নাটোর স্বাস্থ্য বিভাগের (মাতৃসদনের) গাইনী ও প্রসুতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মাজেদুল ইসলামের কাছে।
ডাঃ মাজেদুল ইসলাম ওই রোগীনিকে দেখে আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য বলেন। রোগীনি সম্মতি জানালে ডাক্তার মাজেদ সনোলজিষ্ট হিসেবে নিজেই রোগীনির আলট্রাসনোগ্রাম করেন। ওই রোগীনির আলট্র্রোসনোগ্রাম করার পর ডাঃ মাজেদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত রিপোর্ট দেন। রিপোর্টে রোগীনি ১৯ সপ্তাহের গর্ভবতী বলে উল্লেখ করেন। ওই রিপোর্ট দেখে ওই মহিলা বিস্মিত হন এবং এই বয়সে গর্ভবতী হওয়ার লজ্জায় পড়েন তিনি।
ছেলে-মেয়ে জামাতা ও নাতি-নাতনিদের সামনে কিভাবে দাঁড়াবেন বা কি জবাব দিবেন এমন চিন্তা পেয়ে বসে তার। এক সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে লজ্জা নিয়েই বাড়ি ফিরে যান। ছেলে -মেয়ে সহ পরিবারের সবাই তার কান্না-কাটি কারন জানতে চান। এক সময় সব খুলে বললে তাদের চোখ কপালে ওঠে। তারাও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
এক সময় তারা জোর করেই শহরের অন্য দুটি ডায়াগণষ্টিক সেন্টারে নিয়ে আবারও আলট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। ওই দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া রিপোর্টে মহিলা গর্ভবতী নন বলে উল্লেখ করা হয়।
তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি সম্পর্কে ডাঃ ডাঃ মাজেদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তাদের কিছুই বলেননি। পরে কড়া ভাষায় জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,হয়ত ভুল হয়েছে বলে তাদের জানান।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ ইতিপুর্বেও বেশ কয়েকজন বৃদ্ধার ক্ষেত্রে ডাঃ মাজেদুল ইসলামের আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে ১৯ সপ্তাহের গর্ভবতী উল্লেখ করা হয়েছে। এনিয়ে তাদেরও বিপাকে পড়তে হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে ডাঃ মাজেদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই অভিযোগকে ভিতিতহীন দাবী করে বলেন, রোগী বা তার কোন প্রতিনিধি তাকে এবিষয়ে কিছু বলেননি। এছাড়া রোগীকে কি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সে বিষয়টি তার জানা নেই। তার দেয়া রিপোর্ট ও রোগীকে তার সাথে সাক্ষাতের কথা বলেন তিনি। তবে তিনি এটিকে প্রিন্টিং মিসটেকও হতে পারে বলে জানান।