আজ সোমবার (১২ আগস্ট) মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল এ উৎসবে মুসলমানরা তাদের সামর্থ অনুযায়ী পশু কোরবানি দেবেন। কোরবানীর ঈদের দিন মহান সৃষ্টিকর্তা, পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার প্রতি ত্যাগ ও আনুগত্য প্রদর্শণ করতে সারা বিশ্বের মুসলমানরা দিনের শুরুতেই ঈদগাহ বা মসজিদে সমবেত হয়ে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। তারপর আল্লাহর নামে পশু কোরবানী দেবেন।
আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যে কোরবানি দেওয়ার রীতি চালু হয়েছিল প্রায় চার হাজার বছর আগে। সেদিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হযরত ইব্রাহিম (আ.) নিজ পুত্র হযরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হযরত ইসমাইলের (আ.) পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়।
সেই থেকে হযরত ইব্রাহিমের (আ.) ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলমান সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখ আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে। আর এ কোরবানি বিশেষ করে আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন।
ঈদ উপলক্ষে গতকাল রবিবার (১১ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের সরকারি ছুটি। ঈদ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এছাড়া, ‘ঈদ মোবারক’ লিখিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইটপোস্টে প্রদর্শিত হবে। ঈদের রাতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলোয় আলোকসজ্জা করা হবে।
সারাদেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও সরকারি সংস্থাগুলো জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলো যথাযথভাবে ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। ঈদ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বিনাটিকিটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব শিশুপার্কে প্রবেশের সুযোগ পাবে। বিনাটিকিটে তারা ঢাকা জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান প্রবেশ করতে পারবে।
এদিকে, কোরবানির পশুর বর্জ্যে যেন দুর্ভোগ না হয়, সে বিষয়ে সব সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা।