ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেপটিক ট্যাংক ও পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনে মশার উপদ্রব

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশার বংশ বিস্তারের স্থান ধ্বংস ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। তবে ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মিটিং ও সেমিনার করা ছাড়া কোনো কার্যকর কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়নি। উপরন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেন এবং সেপটিক ট্যাংক ঢাকনা বিহীন হয়ে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। এতে এসব স্থানে মশার লার্ভার বংশ বিস্তার হওয়ায় মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন হাসপাতালে আসা রোগীরা। এছাড়া পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে ফগার মেশিন দিয়ে দুই সপ্তাহ আগে একবার ঔষধ স্প্রে করেই দায়িত্ব শেষ করেছেন।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ভবন এর উত্তর পাশে অবস্থিত ছয়টি সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা ভেঙে দীর্ঘদিন খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিটি ভবনের পাশ দিয়ে নির্মিত পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেন ঢাকনা বিহীন রয়েছে। পলিথিন সহ বিভিন্ন আবর্জনা ফেলার কারণে ড্রেনগুলো অচল হয়ে বৃষ্টির পানি জমে আছে। এতে এসব সেপটিক ট্যাংক ও পয়:নিষ্কাশন ড্রেন মশা সহ নানা কীটপতঙ্গের বংশ বিস্তারের আবাসস্থল হয়েছে। হাসপাতলে কর্মরত কর্মচারীরা এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এদিকে ভাঙ্গুড়াতে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে রোগীর সন্ধান না মিললেও হাসপাতালের অভ্যন্তরে এই অবস্থা দেখে সেবা নিতে আসা মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা যায়, সারাদেশে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান ধর্মঘটে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেওয়ায় পৌরসভার সকল কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। এতে পৌর এলাকার মধ্যে মশার বংশ বিস্তারে কোনো দীর্ঘস্থায়ী কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারেনি পৌরসভা। তবে দুই সপ্তাহ আগে ফগার মেশিন দিয়ে একবার ঔষধ স্প্রে করা হয় পৌর শহরের কিছু এলাকায়। যদিও এতে মশা নিধনে তেমন কার্যকরীতা দেখা যায়নি। এছাড়া মশার বংশ বিস্তার রোধে মিটিং ও সেমিনারের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কার্য পরিধি সীমাবদ্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের উদাসীনতায় হাসপাতাল চত্বরে ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকে মশার বংশ বিস্তার হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, হাসপাতালের ভিতরে এই নোংরা পরিবেশ দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে (ভারপ্রাপ্ত) একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি গত দুই বছর ধরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার চেয়ার ধরে রাখতে বিভিন্ন অফিসে তদবির আর শহরের একটি ক্লিনিক নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। হাসপাতালের ভালো-মন্দ নিয়ে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আব্দুল মালেক বলেন, হাসপাতালে এসে দিনেও দাঁড়িয়ে থাকলে মশা কামড়ায়। আর রাতের বেলায় মশার অত্যাচারে থাকাই মুশকিল। সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপেও হাসপাতালের ভিতরে সেপটিক ট্যাংক ও পয়ঃনিষ্কাশনের নালা অপরিষ্কার ও অরক্ষিত হয়ে মশার বংশ বিস্তার হচ্ছে। হাসপাতালে এই অবস্থা হলে অন্যরা কিভাবে সচেতন হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খাতুন বলেন, খুব দ্রুত সেপটিক ট্যাংকগুলোতে ঢাকনার ব্যবস্থা করা হবে। আর ড্রেনগুলোর ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করে মশার উপদ্রব কমানো হবে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাধারন মানুষকে সচেতন করতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কিছু কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এছাড়া আগামীতে আরও কর্মসুচি পালন করা হবে।