ঘুষ ছাড়া কোন কাজই হয় না নাটোরের বাগাতিপাড়ার উপজেলার দয়ারামপুর বাজারে অবস্থিত ফাগুয়াড়দিয়ার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। এখানে নিয়মই অনিয়মে পরিণত হয়েছে ।। আব্দুল মান্নান নামের এক দালাল ই নিয়ন্ত্রন করেন এই ভূমি অফিসটি । তাকে টাকা না দিলে কোন কাজই হয় না ।
বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়ারদিয়ার ইউনিয়নের দয়ারামপুরে কাদিরাবাদ সেনানিবাস অবস্থিত ।।সে কারণে জেলার একটি গুরুত্বপূর্ন এলাকা এটি। এখানে দোকানপাট বিপনীবিতান সহ নানা রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। সে কারনে দিনদিন জমিজমার দাম বেড়েই চলেছে। আর এ কারনেই ভূমি সংক্রান্ত বিরোধও বেড়েছে বহুগুন।
বিরোধসহ বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা এড়াতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি জমির নামজারি, উন্নয়ন কর পরিশোধ, মিস কেসসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
ভূমি সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে তহশিলদার, পিয়ন সহ সকলকে ঘুষ দিতে হয় ভূমি অফিসে আসা ভুক্তভোগীদের। আর এখান থেকে ঘুষের বড় অংশ চলে যায় উপজেলা ভূমি অফিসে। এই ভূমি অফিসে আসা অধিকাংশ ভুক্তভোগীর মুখে একই কথা। হয়রানী আর ভোগান্তি কি তা এখানে না আাসলে বোঝা যায় না। অফিস নিয়মে প্রত্যেক ধাপে ঘুষ দিলেই ফাইল কর্তাদের টেবিল পর্যন্ত পৌছায়। আর সকল ভুক্তভোগীর সাথে ঘুষ ও ফাইল লেনদেন করেন দালাল আব্দুল মান্নান। তিনি সাধারন মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে তহশীলদার ও উপজেলা ভূমি অফিসে ভাগ বাটোয়ারা করেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দালাল আব্দুল মান্নান যুগযুগ ধরে এখানে দালালি করে সাধারণ মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আর এই ঘুষের টাকা থেকে বাড়ি, জমিজমা সহ অঢেল সম্পদ করেছেন। যখন যে তহসিলদার আসেন তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন তিনি। তবে সব থেকে সখ্যতা বেশি ছিলো সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ তহসিলদার মহিদুল ইসলামের সাথে। মহিদুল ইসলাম ভূমি অফিসে যোগদানের পর থেকে এলাকাবাসী এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে দালাল আব্দুল মান্নানের কাছে। অফিসে কেউ ফাইল নিয়ে আসলেই আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়। আব্দুল মান্নানের হাত ছাড়া তহশীলদার ফাইল গ্রহনই করেন না। দালাল আব্দুল মান্নান ও তহশীলদারের সাথে প্রশাসন সহ বড় বড় দলীয় নেতাদের রয়েছে নিবিড় যোগসূত্র। এতো অনিয়ম চললেও প্রশাসন তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে তহসিলদার মহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আব্দুল মান্নান দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সাথে কাজ করেন। তিনি স্বেচ্ছায় কাজ করেন। আর আমাদেরও উপকার হয়। যে কেউ কাজে সাহায্য করতেই পারে। তাতে তো সমস্যার কিছু নাই। তবে তার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমার কাছে অনেক আসে। আমি সেগুলো গ্রহন করি না কারণ নিজে না দেখে কিছু আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য নই। আবার আমি আব্দুল মান্নানের কাছে কোন প্রকার অর্থ নেই না। অভিযোগ থাকার পরও কেন তাকে অফিসে আসতে দেওয়া হয় তা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমার অফিসে যে কেউ আসতেই পারে। জনসাধারন হিসেবে তার আসার অধিকার আছে বলেই সে আসে। তাই আমিও তাকে আসতে বারণ করি না।
পরে এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী (ভূমি) অফিসার মেরিনা সুলতানাকে জানালে তিনি বলেন, ঘটনাটি অনেকদিন ধরে আমার কানে আসছিলো আমি বিষয়টি দেখছি।