আত্মহত্যা করতে গড়াই নদীতে ঝাঁপ দেয়ার ছয় ঘণ্টা পর ২৫ কিলোটিমার ভাটি থেকে ৯২ বছরের বৃদ্ধাকে জীবিত উদ্ধার করেছে স্থানীয় খেয়া নৌকার এক মাঝি। নদীতে ঝাঁপ দিয়েও মৃত্যু না হওয়ায় কাঁদছেন এই বৃদ্ধা।
বৃদ্ধার অভিযোগ, পারিবারিক কলহের কারণে গভীর রাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছি। কিন্তু এতেও আমার মৃত্যু হয়নি। এমন জীবন আমি রাখতে চাই না।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে কেবল। খোকসা হিজলাবট ঘাটের খেয়া নৌকার মাঝি আয়ুব আলীর চোখে ধরা পড়ে নদীর স্রোতে একজন মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছেন। একবার ডুবছেন আবার ভেসে উঠছেন। এ অবস্থা দেখে নৌকা নিয়ে এগিয়ে যান আয়ুব আলী। একপর্যায়ে জীবিত অবস্থায় বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন তিনি। পরে বৃদ্ধাকে নদীর পাড়ের খানপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
রোববার দুপুরে বৃদ্ধার পরিবারের লোকের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। বৃদ্ধা হেমলা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার যুগীয়া গ্রামের মৃত তাইজাল আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী। তিন ছেলের সংসারে তার আশ্রয় হয়। কিন্তু পুত্রবধূদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় শনিবার রাত ১২টার পর আত্মহত্যার জন্য বাড়ির পাশের গড়াই নদীতে ঝাঁপ দেন বৃদ্ধা।তবে ছয় ঘণ্টার বেশি সময় গড়াই নদীর স্রোতের টানে ২৫ কিলোমিটার ভাটিতে চলে আসেন তিনি। একপর্যায়ে নৌকার মাঝি তাকে উদ্ধার করেন। উপজেলার খানপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ঘরের বারান্দায় গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে বৃদ্ধাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। তখনো কেঁদেছেন বৃদ্ধা। শুধু বলেছেন, নদীও আমাকে সপে নিলো না। এই জীবন রাখতে চাই না।
বৃদ্ধাকে উদ্ধারের কাজে থাকা রাজিয়া খাতুন বলেন, মাঝেমধ্যে বৃদ্ধা তার দুই হাত উঁচু করছিল। তারা হাত দেখেই নদী পাড়ে দাঁড়াই। একপর্যায়ে আয়ুব মাঝি নৌকা নিয়ে আসেন। বৃদ্ধার পরনের কাপড় বাঁধা ছিল।
জানতে চাওয়া হলে বৃদ্ধা বলেন, পুত্রবধূদের অত্যাচারে আত্মহত্যা করতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছি। তবে এখন ছেলেদের কাছে ফিরে যেতে চাই।
বৃদ্ধার ছেলে খয়বর আলী বলেন, রাত ১২টা পর্যন্ত মা ঘরে ছিলেন। তবে সামান্য সাংসারিক বিবাদ ছিল। তবে সকালে মাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি আমরা। বেলা ১০টার দিকে মোবাইলে মায়ের সন্ধান পাই। তাকে আমরা বাড়ি নিয়ে যেতে চাই।