// নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে একটি স্মরণসভার আয়োজন করেন দর্শন বিভাগ। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাঁর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নিলুফার আহমেদের সভাপতিত্বে উক্ত স্মরণসভায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, হাসান আজিজুল হক তার লেখনির মাধ্যমে মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্না তুলে ধরেছেন। তিনি লেখালেখির পাশাপাশি মানুষের অধিকার নিয়ে রাস্তায় আন্দোলনও করেছেন। এখন হাসান আজিজুল হকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হলে তার অসাম্প্রদায়িক আদর্শ, চেতনা ও মানুষের জন্য কাজ করার কণ্ঠস্বর এই সমাজে প্রতিধ্বনিত হওয়া উচিত। তা যদি না হয় তাহলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শুধু আনুষ্ঠানিকতা-ই হবে। কিন্তু উনি শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য লিখে যাননি। উনি গণমানুষের জন্য লিখেছেন। উনি যে মানুষগুলির কথা বলেছেন সেই মানুষগুলো এখনো কিন্তু এই সমাজে আছে। তাই তার মতো আমাদেরও কাজের জায়গা এখনো আছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক, মূখ্য আলোচক ছিলেন বাংলা বিভগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক চৌধুরী জুলফিকার মতিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা,সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম নাজিরা রিদা প্রমুখ। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ৮২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। হাসান আজিজুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখে গেছেন। তার রচিত জনপ্রিয় গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’, ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘নামহীন গোত্রহীন’, ‘পাতালে হাসপাতালে’, ‘আমরা অপেক্ষা করছি’, ‘রোদে যাবো’, ‘রাঢ়বঙ্গের গল্প’ ইত্যাদি। আগুনপাখি ও শামুক যথাক্রমে তার রচিত প্রথম ও শেষ উপন্যাস।