// হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় আসামি ছামিউল ইসলাম ছামু ও আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মিলন চ্যাটার্জী।
হত্যাকান্ডের পর সোমবার রাত হতে ওই এলাকা পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নেতাকর্মীগণ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, সোমবার রাতে জাহিদুলের বোন আঞ্জুমানারা বেগম বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দ্বায়ের করে। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় ১নং আসামিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হত্যাকান্ডের পর আটক চার আসামিকে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
জাহিদুলের নামাযে জানাযা সোমবার রাত ১০টার দিকে সম্পন্ন হয়েছে। জানাযা পূর্ব এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সরকার লেবু, উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম, থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান প্রমূখ। এছাড়া কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তাগণ জাহিদুলের মাগফিতার কামনাসহ শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উপজেলা যুবলীগের আয়োজনে মঙ্গলবার ছাইতানতলা বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান লিটুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিসেস আফরুজা বারী, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সরকার লেবু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ, সদস্য রফিকুল ইসলাম, নিয়ামুল ইসলাম, আজমীর শেখ প্রমূখ।
রোববার রাত ১১ টার দিকে জাহিদুল এবং কবির মিয়া মোটরসাইকেল করে বামনডাঙ্গা থেকে বাড়ি ফিরছিল। উপজেলার শাখা মারা ব্রিজের নিকট পৌচ্ছা মাত্রই ৬ হতে ৭ জন দুর্বৃত্ত রশি দিয়ে তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এলোপাথারি চুরিকাঘাত এবং মারপিঠ শুরু করে। এক পর্যায় জাহিদুলের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। দুর্বৃত্তরা জাহিদুলের সাথে থাকা কবিরকে মারপিঠ করে মাটিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। জাহিদুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে জাহিদুল মারা যায়।