// হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় মাঠজুড়ে শিমের ফুলের শোভা, চাষির মুখে হাসির আভা ছড়িয়েছে। অপেক্ষাকৃত উচু জমিতে শীতের সবজি শিম ক্ষেত। যে দিকে তাকাই দেখা যায়, সবুজের সঙ্গে দুলছে বেগুনি রঙে রাঙানো ফুল। ওইসব এলাকার বাড়ীর আশে পাশে উঠানে কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন শীতের সবজি শিম আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামে শিমের পরিচর্যা করছেন চাষি আতোয়ার রহমান। বেগুনি রঙের ফুলের শোভায় ভরে উঠছে শিম ক্ষেত। প্রকৃতিও বেশ অনুকূলে। শীতের শুরু না হতেই ক্ষেত থেকে শিম তুলে বাজারে বিক্রি করছেন অনেক চাষি। ভালো দাম পেয়ে চাষিদের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির আভা। আগাম শিম চাষ করে ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো শিম। প্রতিবছরই উপজেলার উঁচু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে আসছে আগাম শিম। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন শীতের সবজি শিম আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। শীতের সবজি শিম ক্ষেতের দিকে তাকালেই দেখা যায়, সবুজের সঙ্গে দুলছে বেগুনি রঙে রাঙানো ফুল। সাদা ও বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুলে গ্রামের সবুজ ক্ষেতের প্রকৃতি সেজেছে যেন অন্য রকম এক মুগ্ধতায়। শিমের পরিচর্যা করছেন চাষি মালেকা বেগম। ইতিমধ্যে কিছু শিম তুলে বিক্রি করেছি ১৮০-২০০ টাকা কেজিতে। শীত শুরুর আগে আগে শিম বিক্রি করতে পারলে লাভ বেশি হবে। সেভাবেই শিমের ক্ষেত তৈরি করেছি।
ওই এলাকায় মাঠ জুড়ে শিম ক্ষেত, যা অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। শিমের গাছ, পাতা-ফুল বাতাসে দোল খাচ্ছে। পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
একই ইউনিয়নের জরমনদী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম এ বছর নিজের ৪০ শতাংশ জমিতে শিম আবাদ করেছেন। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে কিছু শিম তুলে বিক্রি করেছি ১৮০-২০০ টাকা কেজিতে। শীত শুরুর আগে আগে শিম বিক্রি করতে পারলে লাভ বেশি হবে। সেভাবেই শিমের ক্ষেত তৈরি করেছি।
ওই জরমনদী গ্রামের কৃষাণী মালেকা বেগম বলেন, এবার ৩০ শতাংশ জমিতে শিম আবাদ করেছেন তিনি। গত বছর এ সময় অতিবৃষ্টিতে শিম ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। তাই খুব একটা লাভ হয়নি তাঁর। এবার আগাম জাতের শিম বিক্রি করে বেশ দাম পাচ্ছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো দামে আরও বেশি শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
গ্রামের কিছু চাষি বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে ১৫০-২০০ টাকা কেজি দরে জমি থেকেই শিম নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। তবে অল্প কিছুদিন পর বাজারে আমদানি বেড়ে গেলে দামও নেমে আসে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তারপরও বর্তমানে ভালো লাভ পেয়ে বেজায় খুশি কৃষক পরিবারগুলো।
এদিকে সুন্দরগঞ্জ পৌর বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, আজ শিম বিক্রি হচ্ছে খুচরা ২৪০-২৫০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮০-৩০০ টাকা কেজি।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাশেদুল কবির বলেন, এবার ৩৮ হেক্টর জমিতে চলতি বছর শীতকালিন শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সবজি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। শীতকালীন সবজি শিম আগাম বাজারে নিয়ে আসতে হলে মার্চ-এপ্রিলে জমিতে লাগাতে হয়। মে-জুনেও লাগানো হয়ে থাকে। এ বছর প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় সবজির চাষাবাদ ভালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভালো উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অফিস।