সুন্দরগঞ্জে তিস্তার নিচু এলাকা প্লাবিত, বন্যার আশঙ্কা

// হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
অবিরাম বর্ষন এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ডুবে গেছে তিস্তার নিচু এলাকা। বুধবার রাত হতে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবন্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, দহবন্দ, শান্তিরাম, কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে ভাঙন। সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে বেসরকারি পানি মাপক যন্ত্রের তথ্য মোতাবেক তিস্তার পানি এখনও বিপসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি হু হু করে ধেঁয়ে আসছে। আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে গোটা চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা গেছে, ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ৫০০ হেক্টর জমির উঠতি আমনধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত। চরের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে অনেকে আশ্রয় কেন্দ্র, উচ্চ স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। অনেকে বসতবাড়িতে অবস্থান করছে।

হরিপুর চরের রেজাউল ইসলামের ভাষ্য, তিস্তায় ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে, ভেসে আসছে গাছপালাসহ বিভিন্ন জীবযন্ত্রুর মরদেহ। এখনও চরের বসতবাড়িতে পানি ঢুকে নেই। তবে নিচু এলাকা ডুবে গেছে। পানি যে হারে ধেঁয়ে আসছে, তাতে করে আশঙ্কা করা যাচ্ছে রাতারাতি চরের বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়বে। বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বেলকা চরের আকবর আলী বলেন, তার বসতবাড়ি আঙিনায় পানি ঢুকে পড়েছে। রাত নাগাত ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়বে। বুধবার রাত হতে বৃষ্টি পড়ছে, পরিজন নিয়ে কষ্টে রয়েছি। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও নেম্বরগণ কোন প্রকার খোঁজ খবর নেয়নি।

কাপাসিয়া চেয়ারম্যান মন্জু মিয়া জানান, চরের লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে য়েতে চায়না। অনেকে ঘরের টুইয়ের মধ্যে কষ্ট করে বসবাস করে। পানি যে হারে ভারত থেকে আসতেছে, তাতে করে রাতারাতি তার ইউনিয়নের গোটা চরাঞ্চল ডুবে যাবে এবং ৬ হাজার পারিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারিভাবে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত কোন প্রকার ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত উপজেলার চরাঞ্চলে বসবাসরত পরিবার সমুহ পানিবন্দির শিকার হয়নি। তবে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, রাতারাতি নিচু এলাকার কিছু পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়তে পারে। সরকারিভাবে শুকনা খাবার ও জিআর বরাদ্দে চাহিদা পাঠানে হয়েছে। অনুমোদন পেলে চাহিদা মোতাবেক ইউনিয়ন ভিত্তিক বিতরণ করা হবে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের অবস্থা অনেক ভাল রয়েছে। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়নের খোঁজ খবর মনিটরিং করা হচ্ছে। বরাদ্দের অনুমোদন পেলে বিতরণ করা হবে।