ন্যায্য দাবী আদায়ের লক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসুচীর অংশ হিসেবে দিনাজপুরে বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতির সংবাদ সম্মেলন

// মনজিদ আলম শিমুল, দিনাজপুর প্রতিনিধি :

ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি পদসৃজন , স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি সমূহ আদায়ে বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতির দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দিনাজপুরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসুচীর অংশ হিসেবে ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দিনাজপুর জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম। এসময় লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জেনারেল এডুকেশন,কম্পোজিশন এন্ড ক্রেডিট রুলস্ ১৯৮০ অনুযায়ী দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তরের শিক্ষা প্রদান, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা, গবেষণা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারের কার্যপরিধি ব্যাপৃত। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তর সংশিষ্ট সকল দপ্তরের নবম গ্রেডের উপরে সকল পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত। এসব পদে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বাদে অন্য কারও পদায়নের সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভুতদের অপসারণের দাবী জানিয়েছি কিন্তু সেটি করা হয়নি। উপরন্তু আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২ টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভুত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চুড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুস্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। আমরা এসকল কর্মকান্ডকে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামীল বলে মনে করছি। শিক্ষা ক্যাডারকে অন্ধকারে রেখে এই বিধি করার এখতিয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। আমরা শিক্ষা ক্যাডার বিরোধী এসকল কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ বিধি বাতিলের দাবী করছি।

শিক্ষার রূপান্তরের অন্যতম কারিগর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ। তাঁরাই প্রনয়ন করেছেন নতুন শিক্ষাক্রম, এর বাস্তবায়়নেও তাঁরাই অন্যতম শক্তি। শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কোন কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মূহুর্তে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য ১ হাজার ২০০ জন। সহযোগী অধ্যাপক পদোন্নতি যোগ্য ৩ হাজার জন, সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন প্রায় ৩ হাজার জন। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছেন। ক্যডার সার্ভিসে শূন্য পদ না থাকলে পদোন্নতি দেয়া যাবে না এমন কোন বিধান নেই। অথচ, শিক্ষা ক্যাডারকে শূন্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়েছে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। এছাড়াও লিখিত বক্তব্যে বিসিএস সাধারন শিক্ষা ক্যাডারের প্রতি নানা বৈষম্যে চিত্র তুলে ধরে প্রতিকারের দাবী করেন। এ সময় দাবি আদায়ের লক্ষে দুই দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।

কর্মসুচী গুলো হচ্ছে আগামী ২ অক্টোবর ২০২৩ সারাদেশে একদিনের কর্মবিলতি পালন করা হবে এবং শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১০-১১-১২ অক্টোবর সারাদেশে তিন দিনের লাগাতার কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি দিনাজপুর ইউনিটের সভাপতি প্রফেসর আবেদুর রহমান,সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আলতাফ হোসেন, দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যাপক সঞ্জীব কুমার রায়, দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যাপক মোঃ ছায়েদ আলী প্রমুখ।