রোহিঙ্গাদের এখনই মিয়ানমারে ফেরা নিরাপদ নয়


// বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের এখনই নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষে দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, ‘তাই আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) পুনর্বাসনের মাধ্যমে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার সর্বাঙ্গীণ সমাধানে অবদান রাখছি।’

২০০৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ এই অঞ্চল থেকে প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে স্বাগত জানিয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখা অন্যান্য দেশগুলোর উদারতাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি, ঐতিহ্যগতভাবে পুনর্বাসন দেওয়া দেশগুলোর বাইরেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টায় যোগ দেবে।’

এতে বলা হয়, মিয়ানমারে শাসকদের চালানো ‘গণহত্যা’র সাড়ে সাত লক্ষ রোহিঙ্গাকে বহনযোগ্য অল্পকিছু জিনিস নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছিল। বাংলাদেশের জনগণ সহানুভূতি ও মানবতার হাত বাড়িয়ে তাদের স্বাগত জানিয়েছিল। প্রায় ১০ লাখ উদ্বাস্তুর প্রতি আতিথেয়তা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের জনগণ। আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) এই উদারতার প্রশংসা করি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে তার এই প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে সমবেত হয়েছিল। আমেরিকার জনগণ ২০১৭ সাল থেকে এই অঞ্চল জুড়ে উদ্ভূত মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ২.১ বিলিয়নের ডলারেরও বেশি অবদান রেখেছে। এর ভেতর রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ১.৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের এই সমর্থন অবিচল রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে আশ্রয় খুঁজে ফেরা রোহিঙ্গারা দীর্ঘকাল ধরে ভুগছে। মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়া, সপরিবারে শান্তিতে জীবনযাপনের সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। সেই লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি, আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতের সমর্থনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার, নৃশংস অপরাধীদের জন্য জবাবদিহিতা এবং সংকটের সমাধান খুঁজে পেতে (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মিয়ানমারের অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে। সমগ্র অঞ্চল জুড়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে বা শেষ করতে সম্ভাব্য সব বিকল্প খুঁজতে আমাদের অবিচল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’