নাটোরের লালপুরে শিক্ষায় আধুনিকতম প্রযুক্তি ব্যবহার

//নাটোর প্রতিনিধি
ক্লাসরুম মানেই ব্ল্যাকবোর্ড, চক-ডাস্টার, টেবিল-চেয়ার। তবে সময়ের সঙ্গে বদলেছে ক্লাসরুমের চিরাচায়িত ধারণাও। পরিবর্তনে এসেছে কম্পিউটার, প্রজেক্টর, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স সমৃদ্ধ রোবট, ড্রোন কিংবা এআর ও ভিআর ডিভাইস সিস্টেমের মত অত্যাধুনিক জিনিসপত্র। শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশ এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কে হাতে-কলমে ধারণা দিতেই করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লুব্ধক নামে স্মার্ট ক্লাস রুমের ব্যবস্থা করলো লালপুর উপজেলা প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় শিক্ষার্থীদের স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে তাই উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ‘লুব্ধক’ নামক এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে স্কুলটির একটি শ্রেণি কক্ষ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৮ মে ‘লুব্ধক’ নামক স্মার্ট ক্লাসরুমটি লালপুরের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য উদ্বোধন করেন নাটোর জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি শ্রেণি কক্ষে ‘লুব্ধক’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় শ্রেণিকক্ষটির সিলিং ও দেওয়ালগুলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্ভর ছবি ও বর্ণনা দিয়ে আকর্ষনীয়ভাবে সাজানো হয়েছে। শ্রেণিকক্ষটিতে অজ ও ঠজ ডিভাইস, ড্রোন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স সমৃদ্ধ রোবট, স্মার্ট মনিটর, উচ্চগতির ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কিত অন্যান্য ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেই অল্প সময়ের মধ্যেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করতে পারছে।
এবিষয়ে দশম শ্রেণি শিক্ষার্থী সানজিদা ইয়াসমিন তিশা, মোবাসসিরুল ইসলাম আদিব ও সুমাইয়া আক্তার বর্ষা বলেন, আমরা লুব্ধক ক্লাসরুমের মাধ্যমে আমরা আগে যেগুলা ইউটিউবে ভিডিওতে দেখতাম, রোবট ড্রোন দেখতাম। সেগুলো আমরা হাতেকলমে শিখতে পারছি, জানতে পারছি। ড্রিম ওয়ালের মাধ্যমে সফল ব্যক্তিদের জীবনী জানতে পারছি। এতে আমরা পড়াশোনায় আরো বেশি অনুপ্রাণিত হচ্ছি।

করিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব বকুল বলেন, লুব্ধক প্রকল্পটির মাধ্যমে আনন্দের সাথে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী উপাদান দ্বারা প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করে শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। এবং আগামী দিনের সৃজনশীল, দ্রুতচিন্তার অধিকারী ও সমস্যা সমাধানে দক্ষ প্রজন্ম হিসেবে গড়ে উঠবে। আর শিক্ষার্থীরাও উদ্যোগটি অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ব্যবহার করে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত, সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে ভিশন-২০৪১ ঘোষণা করেছেন।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত জ্ঞান লাভ করতে পারে এবং স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম স্তম্ভ স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।