// ইয়ানূর রহমান : “নিরাপদ সড়ক চাই-মায়ের কোল শূণ্য হওয়ার বিচার চাই-বেনাপোলে সড়ক পথের অব্যবস্থাপনার অবসান চাই”-এই প্লাকার্ড বহন করে ট্রাক চাপায় ৭ম শ্রেণীর মেধাবী স্কুল ছাত্রী আনিকা নিহতের প্রতিবাদে বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের ও বেনাপোল ডিগ্রী কলেজের শত শত শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বেনাপোল-প্রধান সড়কে।
রোববার (৬ রোববার) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শোক র্যালি শেষে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। এ সময় শিক্ষক, অভিভাবক সহ নিহতের পিতা আলমগীর হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বলা হয়. আমরা আমাদের সহপাঠীর মৃত্যুর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। আর যেন কোন মায়ের কোল শূণ্য না হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সবাই আন্দোলনে নেমেছি। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি সরকার যেন আমাদের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী নিহত স্কুল ছাত্রীর পরিবারের ক্ষতিপূরণ, দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি, সড়ক সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবি জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক ইনতাজুল ইসলাম জানান, বন্দরের জায়গা সংকটের কারনে ভারতে রপ্তানিমুখী ট্রাক টার্মিনালটি এখন ক্রেন ও ফর্কলিফট এর গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে বেনাপোলের প্রধান সড়কটির ২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে প্রতিনিয়ত রাখা হচ্ছে শত শত ট্রাক। সে কারণেই স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ও এলাকার সাধারণ মানুষেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে গেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। আমরা বেনাপোল বন্দরের প্রধান সড়কে প্রতিদিনের এ তীব্র যানজটের প্রতিকার চাই। যাতে আমাদের কমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে। পাশাপাশি স্কুলের সামনে স্পীড ব্রেকার বসানোর দাবি জানান তিনি।
এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ট্রাকে এর আগেও সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে অনেক প্রাণ ঝড়েছে। কিন্তু প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো প্রকার নজরদারি করছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও সড়কের উপরে বাস ট্রাক রেখে প্রতিনিয়ত যানজট তৈরি করছে একটি মহল। দীর্ঘদিনের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে বন্দরটি চললেও কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২ আগস্ট) সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে আসার পথে বেনাপোল চেকপোস্টের বড় আঁচড়া মোড় নামক স্থানে রপ্তানিকৃত পণ্য বোঝাই ট্রাক চাপায় আনিকা আক্তার নিহত হয়। নিহত স্কুল ছাত্রী আনিকা বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। তার রোল নম্বর চার। সে বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া গ্রামের ফেরি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের মেয়ে। পুলিশ ট্রাকসহ চালককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।