// বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজের প্রভাষক ও বড়াইগ্রাম বিজ্ঞান স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মো. ই¯্রাফিল হোসেনের অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষী ব্যক্তির বিচারের দাবিতে পৃথক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রাজ্জাক মোড়-জোনাইল সড়কের রাজ্জাক মোড় এলাকায় তার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা এবং পরে উপলশহর-নিশ্চিন্তপুর ফিডার সড়কের সোনাপুরে তার স্বজন ও গ্রামের বাসিন্দারা মানববন্ধন করেন।
সোনাপুরে আয়োজিত মানববন্ধনকালে ওই কলেজ শিক্ষকের মা রুপা বেগম, সমাজসেবক নাজির প্রামাণিক ও আলালউদ্দিন, গৃহবধু রোজিনা খাতুন ও খাদিজা খাতুন বক্তব্য রাখেন। অপরদিকে, রাজ্জাক মোড়ে মানববন্ধনকালে সমাজসেবক আলিম উদ্দিন প্রামাণিক, ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম, কলেজ শিক্ষকের বড় ভাই নীলচাঁদ প্রামাণিক ও ভাতিজা ফয়সাল আহমেদ, শিক্ষক ইমন আহমেদ, শিক্ষার্থী জিহাদ হোসেন ও নাসরিন আক্তার লিজা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধকালে ই¯্রাফিল হোসেনের বড় ভাই নীলচাঁদ প্রামাণিক বলেন, গত ১৭ জুন রাত ১০টায় তুচ্ছ ঘটনায় বিতন্ডার এক পর্যায়ে কলেজ শিক্ষক ই¯্রাফিল হোসেনকে তার স্ত্রী শান্তনা আক্তার বিউটি বটি দিয়ে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তার আর্তনাদে স্বজনরা ই¯্রাফিলকে উদ্ধার করেন। বিউটির বাবার বাড়িতে বিষয়টি জানালেও তারা উল্টা সে রাতেই নারী নির্যাতন ও যৌতুক দাবির কল্পিত মামলা দিয়ে ই¯্রাফিলকে পুলিশ দিয়ে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
সমাজসেবক আলিম উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, ইতিপূর্বেও বিউটি একাধিকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। এছাড়া প্রায় সময়েই সে স্বামী, শশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের অন্যদের সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করে। এসব ব্যাপারে একাধিবার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে।
প্রতিবেশী ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম বলেন, উনি চা পান খেলেও কোনদিন কোন নেশা করেন না। এটা একবাক্যে গ্রামের সবাই বলবে। অথচ তার মত একজন মানুষের নামে নেশা করে বউকে মারপিটের মিথ্যা কাহিনী দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে একজন কলেজ শিক্ষকের মানহানী করেছে। আমরা এ অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানাই।
প্রতিবেশী গৃহবধু রোজিনা বেগম জানান, প্রায় ২০-২৫ দিন আগে পুকুর ঘাটে ছেলের কাপড় ধুতে যাবার সময়ে পড়ে গিয়ে বিউটি হাতে ব্যথা পায়। সে সময় সে নিজেই ঝাড়ফুঁকের জন্য আমার কাছে আসলে আমি কাপড় দিয়ে বেঁধে দেই। পরে তার স্বামী বাড়িতে এসে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করে এনে দিয়েছে। অথচ এখন সে ব্যান্ডেজ দেখিয়েই বিউটিকে তার স্বামী মেরে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
ই¯্রাফিল হোসেনের মা রুপা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ছেলের বউ আমার ছেলেকে অত্যাচার করে। আমাকেও একাধিকবার মেরেছে। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো-মাঝে মাঝেই সে আমার ছেলেকে বলে যে, তোকেও খুন করবো, দুই সন্তানকেও শেষ করবো। তারপর জেলে গিয়ে বসে থাকবো। এমন পুত্রবধুর কাছে আমার ছেলে ও নাতি-নাতনীরা কেউ নিরাপদ নয়। এ সময় তিনি অবিলম্বে তার সন্তানের মুক্তির দাবিসহ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত করে তার বিচারের দাবি জানান।