// নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে শনিবার দুপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয় ও সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বাড়ির সামনে শান্তি সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। সমাবেশ থেকে বিএনপিকে নাটোরের মাটিতে আর কোন সভা সমাবেশ করতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান। এর আগে একই স্থানে সকালে জেলা বিএনপির সমাবেশে পুলিশী বাঁধার মধ্যেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্য ছাড়াই শেষ হয় বিএনপির সমাবেশ
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকাল পৌনে আটটার দিকে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চে বিএনপির সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শুরুর পরপরই বৃষ্টির মধ্যেই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ ও সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিএনপির সমাবেশের দিকে আসতে থাকে। বিএনপি অফিসের পাশের বিদ্যুৎ অফিসের সামনে মহাসড়কে মোটর সাইকেল রেখে বাঁশের লাঠি নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলির নেতৃত্বে শতাধিক পুলিশ এসময় ছাত্রলীগ নেতাদের বিএনপির সমাবেশের দিকে যেতে না দিয়ে ঘিরে রাখেন। এর মধ্যেই সমাবেশের দিকে ঢিল ছুড়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে পালটাপালটি ঢিল ছোরাছুড়ি শুরু হলে প্রধান অতিথি খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর বক্তব্য ছাড়াই সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা দেয় বিএনপি। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যেই মহাসড়কে পুলিশী বেষ্টনীর মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে দুলু ও বিএনপি বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। প্রায় এক ঘন্টা পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি অফিসের এলাকা ছেড়ে চলে যায়।এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে জেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহবায়ক কাজী শাহ আলম, জেলা যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল চৌধুরী। অপরদিকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিশাল শান্তি মিছিল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আসেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এখানে তারা মহাসড়ক বন্ধ করে শান্তি সমাবেশ করেন। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে রাখা সুসজ্জিত ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চের এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পিপি সিরাজুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক শেখ, ও সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু, সহ-সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রতœা আহমেদ, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি, নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল, নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিন ও জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বিউটি আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি দেশ জুড়ে সন্ত্রাস করছে। বিএনপিকে আর কখনো নাটোরের মাটিতে কোন সভা সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। বিএনপি জামায়াত যেন আর কোন দিন আগুন সন্ত্রাস করতে না পারে সেজন্য জেলা বিএনপির কার্যালয় এলাকাসহ নাটোর জেলাকে সন্ত্রাস মুক্ত এলাকা ঘোষণা দেয়া হয় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ থেকে। এদিকে বিএনপির সমাবেশে আসার সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উপরে পথে পথে হামলার ঘটনায় ১০ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়ে।ে সকালে বিএনপির সমাবেশ শুরুর আগে কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ দুটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে। ককটেল বিস্ফোরন ও এ সব হামলার জন্য দলের জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন। তবে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আসলাম হোসেন সকল হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।