নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে দলীয় কোন্দলকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। লালপুর সদরে আওয়ামীলীগের একটি কার্যালয় থাকলেও শুক্রবার ( ২৬ মে) সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক শামীম আহমেদের উদ্যোগে গোপালপুরে উপজেলা আওয়ামীলীগের আরোও একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শরিফুল ইসলাম রমজান। এতে দলীয় কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায়
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগ চার ভাগে বিভক্ত। প্রায় সাত বছর পর গত বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক শফিকুল ইসলামের অনুসারী তৎকালীন সভাপতি আফতাব হোসেনকে আবার সভাপতি করা হয়। আগের সাধারণ স¤পাদক ইসহাক আলীকে বাদ দিয়ে শামীম আহমেদকে সাধারণ স¤পাদক করা হয়। শামীম আহমেদ জেলার বর্তমান সাধারণ স¤পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের অনুসারী। ফলে শুরু থেকেই সভাপতি ও সাধারণ স¤পাদকের মধ্যে বৈরী স¤পর্ক তৈরি হয়। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায় না। লালপুরে উপজেলা আওয়ামীর লীগের কার্যালয় থাকলেও সেখানে সাধারণ স¤পাদক ও তাঁর অনুসারীরা বসেন না। সভাপতি আফতাব হোসেন ওই কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানা গেছে।
এমনই প্রেক্ষাপটে কাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান গোপালপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু সাধারণ স¤পাদকের অনুসারীদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। আমন্ত্রণপত্রে বিশেষ অতিথি হিসেবে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকসানা মোর্ত্তজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেনের নাম উল্লেখ থাকলেও তাঁরা কেউ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সসম্পাদক শামীম আহামেদ সাগর,জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম সেন্টু,উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোর্শেদ আলম,আওয়ামীলীগ নেতা ফিরোজ আল হক ভূইঁয়া, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন সহ দুয়ারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম লাভলু প্রমুখ।
বৃহ¯পতিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ২০ বছর ধরে লালপুর
বাজারে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ
ব্যাপারে কারও কোনো আপত্তি না থাকা সত্ত্বেও উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য আলাদা কার্যালয়
খুলে বিভক্তি ডেকে আনা হচ্ছে।
লালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহামেদ সাগর বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাথে মরামর্শ করে উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় নেওয়া হয়েছে।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু বলেন, বিগত ২০ ধরে লালপুর বাজারে অবস্থিত উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের মাধ্যমে আওয়ামীলীগের সকল কর্মকান্ড সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে।উপজেলা আওয়ামীলীগের স্থানীয় কার্যালয় থাকার পরেও আরো একটি উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধনের ঘোষণা শুনে আওয়ামীলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে দলের ঐক্যবদ্ধতা বিনষ্ট হচ্ছে। এবিষয়ে নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন,উপজেলা আওয়ামীলীগের একাধিক কার্যালয় হতে পারে। তিনি আরো বলেন,দলকে সু-সংগঠিত করতে প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের কার্যালয় করা হবে। এতে সভাপতিসহ কারও কারও আপত্তি থাকতে পারে। তবে ভবিষ্যতে সমন্বয় করে নেওয়া হবে।