// নাটোর প্রতিনিধি
অভাব-অনাটনের মধ্যে ছোট্র একটি কুড়ে ঘরে জন্ম নেয়া মেধাবী বৃষ্টি খাতুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। সে নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের নিংগইন মহল্লার দিনমজুর বিদ্যুৎ আলীর মেয়ে। বৃষ্টি খাতুনের পুরো মহল্লায় এখন আনন্দের জোয়ার বইছে। এদিকে তার মেডিকেল কলেজে ভর্তির সু-খবরে তার বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে হাজির হন স্থানীয় সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মীরা।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে বৃষ্টি খাতুনের মেধা তালিকা ৭৬৫ তম। এক ঘন্টা সময়ের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় বৃষ্টি খাতুন পেয়েছেন ৭৫ দশমিক ২৫। তার মেরিট স্কোর ২৭৫ দশমিক ২৫। তার ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ।
বৃষ্টি খাতুন ২০২০ সালে সিংড়ার নিংগইন জোড়মল্লিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে “অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন সিংড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম ইউসুফ আলী। আর নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর নির্মাণ করে দেন ততকালীন ইউএনও এবং বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাসরিন বানু। বৃষ্টির স্বপ্ন পূরণের শুভ সুচনা শুরু হয়। এরপর এইচএসসি পরীক্ষায় সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ থেকেও জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
শিক্ষার্থী বৃষ্টি খাতুন বলেন, মানুষের সহযোগিতায় আমি ডাক্তার হতে যাচ্ছি। তাই সারা জীবন অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই। আর বৃষ্টির মা মুন্নি আরা তিনি মেয়ের জন্য সকলের দোয়া কামনা করেন।
সিংড়ার বর্তমান ইউএনও মাহমুদা খাতুন বলেন, অভাব-অনাটনের সংসারে জীবনযুদ্ধে জয়ী একটি মেধাবী মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। আর একজন দিনমজুরের মেয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ হয়েছে এটা বড় আনন্দের বিষয়। তিনি প্রয়োজনে মেধাবী বৃষ্টিকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এবিষয়ে সিংড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম ইউসুফ আলী বলেন, বৃষ্টি তার কথা রেখেছে। ২০২০ সালে যখন তার বাড়িতে গিয়ে তার পড়াশোনার দায়িত্ব নেই তখন সে বলেছিল সে মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে। আজ সে মেডিকেলে চান্স পেয়ে প্রমান করেছে সত্যিই সে পরিশ্রমী এবং মেধাবী। সে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আগের মতোই, ডাক্তার না হওয়া পর্যন্ত তার লেখাপড়ার যাবতীয় ব্যায়ভার আমরা বহন করবো। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি, এবং সেখানকার যাবতীয় খরচাদী নিয়ে তার কোন চিন্তা নাই, ওর চিন্তা শুধুই লেখাপড়া।