এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ খাদ্য শষ্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। পৌষ মাসের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক। আমন ধান কাটার পর শীতের শুরুতে দিগন্ত জুড়ে দেখা যায় হলুদ সরিষা ফুল। দেখে মনে হয় যেন প্রকৃতি সেজেছে হলুদের সাজে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় গত মৌসুমে ৯৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার সরিষার আবাদ বেড়ে ১৪৬৫ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২১০ হেক্টর। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে আগ্রহী হয়েছেন। অন্যদিকে বর্তমানে বিশ্ব বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় সরিষা তেলের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে ক্রেতাদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার আংগারপাড়া, টংগুয়া, সহজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ। দেখে মনে হয়ে হলুদ চাদরের বিছানা। এ সময় ছোট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়েদের দেখা যায় সরিষা মাঠের ছবি তুলতে। প্রায় ২ মাস পর ঘরে উঠবে সরিষা।
সহজপুর গ্রামের কৃষক গোবিন্দ সেন বলেন, ‘এ বছরে ২ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে এবং ফুলও এসেছে ভালো। প্রতি বছর বিঘা প্রতি ১২-১৩ মণ করে পেলেও এ বছর ১৪-১৫ মণের অধিক সরিষা হবে।’
উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আবেদ আলী বলেন, ‘বোরো ধান লাগানোর আগে জমিতে সরিষা লাগানো হয়। সরিষার দাম ভালো থাকায় এ বছর ৪ বিঘা সরিষা আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় বলেন, সরিষা চাষে লাভ হওয়ায় দিন দিন সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। এই লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান ও সহযোগিতা করছে।