ঝিনাইগাতীতে চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী মোস্তফা গ্রেপ্তার

মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে চাঞ্চল্যকর ৫মাসের শিশু সন্তান হত্যা মামলায় ১২বছর আত্মগোপনে থাকা মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী মো. মোস্তফা (২৮)কে গ্রেপ্তার  করেছে র‍্যাব-১৪ জামালপুর। 

গত ১ জানুয়ারী রবিবার বিকেল সাড়ে ৪ঘটিকার ঢাকা জেলার খিলগাঁও থানাধীন নন্দিপাড়া হাজীবাড়ী এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের গজারীকুড়া গ্রামের আঃ রহিমের ছেলে।

র‍্যাব-১৪ এর প্রেস ব্রিফিং সুত্রে জানা গেছে, জামালপুর জেলার 

বকশীগঞ্জ উপজেলার নতুন টুপকারচর গ্রামের মো. উজির আলীর মেয়ে  রুজিনার সাথে  শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের গজারীকুড়া গ্রামের আঃ রহিমের ছেলে মো. মোস্তফার ২০০৭ সালে গার্মেন্টসে চাকরি করার সুবাদে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২বছর পর রুজিনার সাথে মোস্তফার পারিবারিক ভাবে বিবাহ  হয়। বিবাহের পর মোস্তফা রুজিনাকে নিয়ে কিছুদিন তার দেশের বাড়ীতে সংসার করার পর পূনরায় দুজনেই ঢাকা গিয়ে আবার গার্মেন্টসে চাকুরী করে। পরবর্তীতে রুজিনা গর্ভবতী হলে তারা স্বস্ত্রীক দেশের বাড়ীতে চলে আসে এবং তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। এর পর মোস্তফা তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে থেকেই  দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। অপরদিকে  রুজিনার বাবা

নিতান্তই গরীব হওয়ার ফলে বসবাসের জায়গা না থাকায় একই গ্রামের জনৈক মৃত সোহরাব মেম্বারের ছেলে গিয়াস উদ্দিনের (৪৮) বাড়ীতে একটি পরিত্যাক্ত রান্না ঘরে সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। এমতাবস্থায় গত ২০/০৫/২০১১ ইং তারিখে রোজ শুক্রবার বিকেলে বিবাদীর সাথে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক দ্বন্ধের সুত্রপাত হয়, কলহের এক পর্যায়ে মোস্তফা রুজিনার উপর নির্মম অমানুষিক নিযার্তন চালায়, উক্ত শারীরিক নিযার্তনের ফলে রুজিনা নিস্তেজ হয়ে পরে, এতেও মোস্তফার আক্রোশ না কমিলে এক পযার্য়ে মোস্তফা তার পাঁচ মাস বয়সি শিশু সন্তান মো. আসিফকে দুই পা ধরে ঘরে থাকা ঢেকির সাথে সজোরে পরপর তিনবার আছাড় দিয়ে জখম করে এবং এর ফলশ্রুতিতে তাদের একমাত্র ৫ মাসের ছেলে মো. আসিফ মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে এবং মৃত্যুবরণ করে। বিবাদী এই লোমহষর্ক ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশেপাশের লোকজন পাষন্ড পিতাকে আটক করে এবং পরবর্তীতর নিকটস্থ থানায় সংবাদ পৌছাইলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ এসে পাষন্ড পিতা মো. মোস্তফা (২৮) কে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সপোর্দ করে। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত কৃর্তক জামিন প্রাপ্ত হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন নাম যথা কুদ্দুস, রজব আলী এবং ইয়াসিন আলী সজিব ইত্যাদি পরিচয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অটোচালক হিসেবে বসবাস করে আসছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক ০২/১২/২০২০ ইং তারিখে মৃত্যুদন্ড রায় ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে জামালপুর ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল গত ০১/০১/২০২৩ ইং তারিখ অনুমান ১৬:৩০ ঘটিকায় ঢাকা জেলার খিলগাঁও থানাধীন নন্দিপাড়া হাজীবাড়ী এলাকা হতে ধৃত আসামীকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী উক্ত ঘটনার বিবৃতি দেয় এবং সত্যতা স্বীকার করে। ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানার মামলা নং-২০/১৩০, তারিখ-২০/০৫/২০১১ ইং, ধারা-৩০২ দঃবিঃ মূলে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজু করা হয়। ধৃত আসামীকে ঝিনাইগাতী থানায় উপরোক্ত ধারা মোতাবেক হস্তান্তর করা হয়েছে।