সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়ায় অনলাইন ফ্রি-ফায়ার গেম খেলা নিয়ে দ্বন্দের জেরে খুন হয়েছিল ১৩ বছরের কিশোর সিফাত এবং খুন করেছিল তারই বন্ধু ১৩ বছর বয়সী আরেক কিশোর।
এই আলোচিত হত্যাকান্ডে জড়িত সেই কিশোর (১৩) কে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার মনীপুরীপাড়া এলাকা থেকে মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) রাতে গ্রেপ্তার করেছে। একই সাথে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি ও জ্যাকেট উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিশোর অপ্রাপ্তবয়সের হওয়ায় তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে সে বগুড়া শহরের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র বলে জানা যায়।
এদিকে হত্যার শিকার কিশোর সিফাত (১৩) বগুড়া শহরের নূরানীমোড় এলাকার শাহ আলমের ছেলে।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ মোবাইল গেম ‘ফ্রি ফায়ার’ খেলাকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছিল। ওই গেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড না দেয়ার কারণে সিফাতকে নৃশংসভাবে খুন করে তারই কিশোর বন্ধু ।
পুলিশ সুপার জানান, সিফাতের থেকে কৌশলে তার কিশোর বন্ধু ফ্রি ফায়ার গেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। সিফাত ওই গেম তার কিশোর বন্ধুর কাছে বারবার ফেরত চাইলে সে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে অন্য কয়েকজন বন্ধুর সাহায্যে সিফাত ওই গেম আইডি ফেরত নেয়। গত ২৫ ডিসেম্বর সিফাত তার বোনের মুঠোফোন ঠিক করার জন্য বাহিরে আসে। এ সময় হত্যাকারী ওই কিশোর বন্ধু তাকে নিজ দাদার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর নিয়ে আসে। ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ওই স্থানে এক বাঁশ বাগানে সিফাতকে নিয়ে গিয়ে প্রথমে গলায় ধারালো চাপাতি দিয়ে আঘাত করে ওই কিশোর বন্ধু। সিফাত এ সময় মাটিতে পড়ে গেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেঁটে ও বাম হাতের কবজির রগ কেটে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, উক্ত লাশ উদ্ধারের পর পরই হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন ও দোষীদের গ্রেফতারে জেলা পুলিশ তৎক্ষনাৎ অভিযান শুরু করেন। তদন্ত শেষে হত্যাকান্ডে জড়িত তারই বন্ধুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় তারা। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যথাক্রমে আব্দুর রশিদ (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ও মোতাহার হোসেন (ডিএসবি), জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাইহান ওলিউল্লাহ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গেল ২৬ ডিসেম্বর বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিতপুর থেকে অজ্ঞাত এক শিশুর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে গতকাল রাজধানীর মনিপুরীপাড়া থেকে হত্যাকারী কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।