ডায়াবেটিসের প্রথম গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডায়াবেটিসের প্রথম গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ঘোষণা করেছে বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ)।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ডায়াবেটিস সম্মেলন-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সদ্যনির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সম্মাননাপত্রটি গ্রহণ করেন পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে আইডিএফ-এর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক অ্যান্ড্রু বোল্টন; আইডিএফ-এর অন্যান্য প্রতিনিধি এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে আগত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা, পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশি নেতা, সাংবাদিক ও অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারীদের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কোনও ব্যক্তিকে “গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস”-এর সম্মানসূচক উপাধি প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দুই বছর “গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস” হিসাবে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী মানুষের মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণকালে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের একজন প্রবক্তা হিসাবে উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত এক ভিডিও বার্তায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনকে এ সম্মাননার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সশরীরে উপস্থিত হতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশুসহ প্রায় ৮৫ লাখ আর সমগ্র পৃথিবীতে প্রায় ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবেটিস এবং এ সম্পর্কিত অন্যান্য জটিলতা নিয়ে বসবাস করছেন। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং জনসচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতির বাস্তবায়ন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশ সকল ডায়াবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে এবং বিনামূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ কার্যক্রমও শুরু করেছে। দেশব্যাপী ১৮০০ এর বেশি সুসজ্জিত কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেন্টারে প্রশিক্ষিত চিকিৎসাকর্মীরা ডায়াবেটিস রোগীদের সেবা প্রদান করে চলেছে।

ডায়াবেটিসের মতো নানা অসংক্রামক রোগকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনের পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং এ সংক্রান্ত গবেষণায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি ডায়াবেটিসের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসাবে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এছাড়াও বিশ্বশান্তির প্রতি তার অব্যাহত সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী বিশ্বের সকল মানুষ এবং তাদের শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষ থেকে আমি বিশ্বনেতাদের কাছে এখনই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবাইকে অবশ্যই অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধের বদলে আমাদের নাগরিকদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সে সম্পদ ব্যবহার করতে হবে।