সহোদর বোনের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে বিভিন্ন মামলায় ঘায়েল করার অপচেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টারঃ সহোদর বোনের ২ কাঠা জমি আত্মসাৎ করে নিজের ভাই ও বোনদের নামে ৭/৮ টি হয়রানীমূলক মামলা করার অভিযোগ উঠেছে পাবনা সদর থানার হেমায়েতপুর চরসাধুপাড়া মহল্লার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ কোমেলা খাতুনের বিরুদ্ধে। কোমেলার সহোদর বোন ডলি খাতুন সহ অন্যান্য বোন ও ভাগ্নি ঝুমুর গতকাল ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দৈনিক সিনসা কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ সব কথা বলেন। পশ্চিম সাধুপাড়া মহল্লার আব্দুল আজিজের স্ত্রী ডলি খাতুন জানান, তারা ৭ ভাই বোন। তিনি দীর্ঘ ২৫/৩০ বছর ধরে ঢাকায় গার্মেন্টস এ চাকুরী করেন। তিনি ২০০৪ সালের ৯ জুন বুলজান নেছার কাছ থেকে ২ কাঠা জমি ক্রয় করেন। যা পাবনা সাব রেজিস্টার অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ৪৮৯৭ নং বিক্রয় কবলা দলিলে খরিদ করা হয় । জমিতে অর্ধশত মেহগনিসহ শতাধিক বিভিন্ন গাছ লাগান।পাশাপাশি জমি হওয়ায় জমির গাছ দেখা শোনার জন্য ছোট বোন কোমেলা খাতুনকে বলে ঢাকা যান। ছোট বোন কোমেলা তাকে কিছু না জানিয়ে জমির গাছগুলো কেটে জমির উপর গোয়াল ঘর, বাথরুম নির্মাণ করে। পরবর্তীতে ডলি খাতুন নিজ জমি ফেরত পেতে পারিবারিক ভাবে বৈঠক করেন। বৈঠকে সমাধান না হওয়ায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে ২৮ মার্চ/২২ শালিস করা হয়।

শালিসে ডলি খাতুনের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য কোমেলা কে বলা হয়। শালিসের সিদ্ধান্ত না মানায় ডলি খাতুন পাবনা থানায় জানান। থানা থেকে ফোর্স পাঠানো হয় এবং তারা ডলি খাতুনের জায়গা বুঝে দেন। ডলি খাতুন তার জমির উপর টিনের ঘর নির্মাণ করেন এবং প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেন। মুল ফটকে গেট তৈরী করেন। এর পর থেকে একের পর এক মামলা করে ডলি খাতুনসহ অন্যান্য বোন ও ভাইদেরকে আসামী করা হয়েছে। কোমলা খাতুন নিজের মাথায় ইট দিয়ে নিজেই আঘাত করে ( ভিডিও ফুটেজে দেখা তথ্য) পাবনা জেনারেল হাসপতালে ভর্তি হয়। কোমলার স্বামী সাইফুল নিজের গোয়াল ঘরের গরু নিজেই বিক্রয় করে ( ভিডিও ফুটেজে দেখা তথ্য) ডলি খাতুনসহ অন্যান্যদের নামে মামলা করে। এরপর ডলি খাতুনের প্রাচীর ভেঙ্গে ঘরের দরজা জ¦ানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায় কোমেলা গং । জমিজমার বিরোধে ১ জুলাই /২২ রাত সাড়ে ১১ টায় চর সাধুপাড়ার মৃত আবু বক্কারের ছেলে সাইফুল ইসলাম, তার স্ত্রী কোমলা খাতুন, ছেলে পারভেজ ও রিপন মোল্লার ছেলে স্বপন গং সশস্ত্র অবস্থায় ডলি খাতুনের বাড়ীর সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় ডলি খাতুন ও তার ভাগ্নি ঝুমুর খাতুন (২৫) কোমলা খাতুন গংদের গালিগালাজ করতে মানা করেন। কোমলা গং ক্ষিপ্ত হয়ে ডলি খাতুনের মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ মারে। কোপে মাথার পিছনে লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হন। তাকে উদ্ধার করতে ঝুমুর এগিয়ে আসে। ঝুমুরের উপর চাপাতি দিয়ে আঘাত করা হয়। চাপাতির আঘাতে ঝুমুরের হাতে ও পায়ে রক্তাক্ত জখম হয়। এ ঘটনায় পাবনা থানায় লিখিত এজাহার দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় দু আসামী আটক করে পাবনা কোর্টে চালান করা হয়। কয়েকদিন পরেই জামিনে মুক্ত হয়ে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়। ্ বিভিন্ন ভাবে প্রতিপক্ষকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। ২৯ নভেম্বর/২২ ডলি খাতুন তার জমির উপর মাটি ভরাটের কাজ করাতে গেলে আসামী কোমলা ও তার স্বামী ও ছেলেরা মিলে কাজ বন্ধ করে দেয়। তারা আরও জানান তদন্তকারী এস আই সাগর তাদের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবী করেন। দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় একতরফা ভাবে কোমলার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ( ৩০ হাজার টাকা দাবীর ভিডিও দেখান তারা)। এছাও ২০২০ সালের ৯ মার্চ পৌর ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মিজানের স্বাক্ষরিত পত্রে দেখা যায়, সেখানে একতরফা ভাবে কোমেলার নামে .০৩৩০ একর জমি মালিকানা দেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে সরেজমিনে গিয়ে ডলির দেখা পাওয়া যায়নি। অথচ ডলি জানেন না কখন তার কাছে উক্ত সার্ভেয়ার গিয়েছিলেন। এমনকি কোন নোটিশও পাননি তিনি। এ ভাবে একের পর এক কোমলার অর্থের কাছে হেরে যাচ্ছেন ডলি খাতুন। তিনি নিরুপায় হয়ে গতকাল সাংবাদিকদের কাছে আসেন এবং এসব তথ্য দেন। ডলি খাতুন আরও জানান, তার বিরুদ্ধে মামলা করায় মাঝে মাঝে তাকে ঢাকা থেকে পাবনায় আসতে হয়। এতে তার গার্মেন্টস এর চাকুরী চলে গেছে। ডলির ভাগ্নি পশ্চিম সাধুপাড়ার নাদিমের স্ত্রী ঝুমুর জানান , তার ২ খালার মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করায় তার খালা কোমলা গং তাকে রক্তাক্ত জখম করা সহ বিভিন্ন মামলায় হয়রানী করছে । এমনকি সরকারি চাকুরীরত তার স্বামী পিডিবিতে কর্মরত আরিফুর রহমান এবং তার মামা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডে চাকুরীরত আজাদ হোসেন মুকুলকে আসামী করা হয়েছে। সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডলি খাতুনের তিন বোন যথাক্রমে পশ্চিম সাধু পাড়ার সাহেব আলীর স্ত্রী আসমা খাতুন, আবুল হোসেন সিকদারের স্ত্রী নাছিমা বেগম এবং মুকুল হোসেনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন প্রমুখ।