মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি : ”মেয়ে আমার অংহকার, ১৮’র আগে বিয়ে নয়, এই আমার অঙ্গিকার” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির আয়োজনে ১৬ নভেম্বর বুধবার বেলা ১১ঘটিকায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের রাংটিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের বাড়ীর আঙ্গীনায় বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে থাকা কিশোরীদের মাঝে তথ্য কার্ড বিতরণ করা হয়। সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচি শেরপুর জেলার জেলা ব্যবস্থাপক মো. আজাদ রহমানের সঞ্চালনায় ও রাংটিয়া পল্লীসমাজের সেক্রেটারী আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে তথ্য কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নলকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. রোকনুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ব্র্যাক জেলা সমন্বয়কারী ফারহানা মিল্কী। এসময় অন্যান্যেদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাইক্রোফাইন্যন্সের এরিয়া ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম, সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির কর্মসূচি উপজেলার অফিসার হোসনে আরা পারভীনসহ ইউপি সদস্য, শিক্ষক,সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে রাংটিয়া গ্রামের ৩০জন কিশোরী যাদের বয়স ১২ হতে ১৭ এর মধ্যে এবং বাল্য বিয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের তালিকা করে নাম, পিতা-মাতার নামসহ জন্মতারিখ এবং ১৮ বছর উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ উল্লেখ্য পূর্বক একটি করে তথ্য কার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়াও কার্ডে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ব্র্যাক অফিসের নম্বরসহ সরকারী হটলাইন ১০৯ উল্লেখ রয়েছে। যা কিশোরীদের বাড়ীতে দৃশ্যমান জায়গায় লাগিয়ে রাখবে এবং পল্লীসমাজের সদস্য এবং ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির পক্ষ থেকে নিয়মিত ফলোআপ করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে কিশোরী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমাজে নারী পুরুষ উভয়েরই সমান ভাবে বেড়ে উঠার অধিকার রয়েছে। একজন নারী হওয়াতে যে সে এগিয়ে যেতে পারবে না সেটা ঠিক নয়। একজন নারীও পারে পরিবার ও সমাজে ভূমিকা রাখতে। আর এই ভূমিকা রাখার জন্য বাল্য বিয়ে বন্ধ করা খুবই জরুরী। বর্তমান সরকার নারীর অধিকার, নারীর ক্ষমতায়নসহ বাল্য বিয়ে, নারী নির্যাতন বন্ধে বদ্ধ পরিকর। সরকারের সহযোগি হিসেবে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকও এই বিষয়ে কাজ করে চলেছে। সকলে এক সাথে কাজ করলে এই ব্যধি থেকে সমাজ মুক্তি পাবে। এছাড়া তিনি বাল্যবিয়ের আইনের বিষয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ৩০ জন কিশোরীর মাঝে অতিথিরা তথ্যকার্ড বিতরণ করেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট কিশোরীদের অভিভাবক, এলাকার বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণী পেশার প্রায় দেড় শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে প্রধান অতিথি বাল্য বিবাহকে “না বলি” বিষয়ে শপথ বাক্য পাঠ করান।