নেত্রকোনার দুর্গাপুরে টঙ্ক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘আনরিভিলড হিস্ট্রি অব দ্য হাজং’ বা ‘অনন্দিত হাজং বিদ্রোহ’ প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত (প্রিমিয়ার শো) হয়েছে।
২৩ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেলে ‘অনন্দিত হাজং বিদ্রোহ’ ম্যানেজমেন্ট টিমের আয়োজনে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির সম্মেলনকক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব উল আহসান। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক সুজন হাজং।
গীতিকার সুজন হাজং বলেন, আগামী প্রজন্মের কাছে গুরত্বপূর্ণ দলিল ‘অনন্দিত হাজং বিদ্রোহ’। হাজং জনগোষ্ঠীর বীরত্বগাথা লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস ওঠে এসেছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। আমি বিশ্বাস করি প্রামাণ্যচিত্রটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমাদৃত হবে।
স্বাগত বক্তব্য দেন ‘অনন্দিত হাজং বিদ্রোহ’ প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতা মাহফুজ সরকার। ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির নৃত্যশিক্ষক মালা মার্থা আরেং এবং প্রিজম হাজং যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী গবেষক ও প্রাবন্ধিক স্বপন হাজং, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী গবেষক আলী আহমদ খান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার রিছিল, অনন্দিত হাজং বিদ্রোহের সহকারী পরিচালক আলোক হাজং প্রমুখ।
১৯৩৭ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত বৃহত্তর নেত্রকোনা অঞ্চলে টঙ্ক আন্দোলন বা হাজং বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এই আন্দোলনে হাজংদের বীরত্ব ইতিহাসে অবমূল্যায়িত বা গোপন রয়ে গেছে। হাজংদের ওপর হওয়া নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র রয়ে গেছে আড়ালে। প্রায় বিস্মৃত এই ইতিহাসকে আবার সামনে তুলে আনার প্রচেষ্টা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রাামাণ্যচিত্রটি পরিচালনা ছাড়াও এর গবেষণা ও প্রযোজনাও করেছেন মাহফুজ সরকার। তিনি বলেন, ১৯৩৭ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত বৃহত্তর নেত্রকোনা অঞ্চলে টঙ্ক আন্দোলন বা হাজং বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এই আন্দোলনে হাজংদের বীরত্ব ইতিহাসে অবমূল্যায়িত বা গোপন রয়ে গেছে। হাজংদের ওপর হওয়া নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র রয়ে গেছে আড়ালে। প্রায় বিস্মৃত এই ইতিহাসকে আবার সামনে তুলে আনার প্রচেষ্টা নিয়ে ‘আনরিভিলড হিস্ট্রি অব দ্য হাজং’ বা ‘অনন্দিত হাজং বিদ্রোহ’ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে।
নির্মাতা জানান, প্রামাণ্যচিত্রটি সম্পাদনা করেন মুহাম্মদ মহি। চিত্রগ্রাহক হিসেবে ছিলেন ফিডেল ডং ও আলোক হাজং। প্রামাণ্যচিত্রটির টিজার ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ভবিষ্যতে ঢাকাসহ দেশে ও বিদেশে এর প্রদর্শনী করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।