যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউজের ভোল্ট থেকে সাড়ে ১৯ ভরি সোনা চুরির মামলায় আরো একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক করেছে সিআইডি পুলিশ।
আরশাদ হোসেন নামে ওই কর্মকর্তাকে গত শনিবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তার কর্মস্থল মুন্সীগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করা হয়। সোনা চুরির ঘটনার সময় তিনি বেনাপোল কাস্টম হাউজের গোডাউন ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন। আটক আরশাদ হোসেন বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার অশ্বিকাপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ যশোরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, সোনা চুরির মামলায় ইতোপূর্বে বেনাপোল কাস্টম হাউজের গোডাউনে বিভিন্ন সময় কর্মরত ৪ জন ইনচার্জকে (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা) আটক করা হয়। তাদের আদালতে দেয়া জবান বন্দির তথ্যের ভিত্তিতে আরশাদ হোসেনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (০৭ জানুয়ারি) তাকে যশোরের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সিআইডির দাবি, আটক আরশাদ হোসেন বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ভোল্টের ইনচার্জ ছিলেন। ওইসময় তার কাছেই চাবি থাকতো। তাছাড়া, সোনা চুরি হওয়ার পরও লকারের তালা অক্ষত থাকায় আরশাদ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর রাত ৮টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যে কোনো সময় বেনাপোল কাস্টম হাউজের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার গোডাউনের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চোরেরা।
এরপর গোডাউনের ভেতরে থাকা ভোল্ট চাবি দিয়ে খুলে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক ৩ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। যার মূল্য ১০ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার তিনশ’ ৬২ টাকা। এই ভোল্টের চাবি থাকতো সর্বশেষ ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুলের কাছে।
এছাড়া, গোডাউনের বিভিন্ন লকারে সোনাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিল। সেগুলো ছিল অক্ষত। ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক অজ্ঞাতনামা আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন। একই সাথে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে পুলিশ বরখাস্ত গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সোনা চুরির মামলায় আটক করে। এছাড়া সাবেক গোডাউন ইনচার্জ বিশ্বনাথ কুন্ডুসহ আরো ৩ কর্মকর্তাকে আটক করে তদন্ত সংস্থা সিআইডি পুলিশ। সর্বশেষ গত শনিবার সন্ধ্যায় আটক করা হয় সাবেক গোডাউন ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আরশাদ হোসেনকে। এ নিয়ে গোডাউনে বিভিন্ন সময় দায়িত্বে থাকা ৫ কর্মকর্তাকে আটক করা হলো।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আটক আরশাদ হোসেনকে জীজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।