নাটোর প্রতিনিধি
নিঃসন্তান বন্ধ্যা মহিলারা গোঁসাইজীর আশ্রমের অক্ষয় তলা নামক স্থানে বটগাছের নিচে সদ্যøান শেষে ভেজা কাপড়ে বসে আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের জন্য ভিক্ষা চাইবেন ।যদি গাছের ফল বা পাতা আঁচলের ওপর পড়ে তাহলে নিঃসন্তান নারী সন্তান লাভ করবে।
এমনই বিশ্বাস নিয়ে অনেক বন্ধ্যা নারী ভীড় করছে নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের গোঁসাইজীর আশ্রমে । সরজমিনেঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই বটগাছের নিচে চারজন নারী ভকÍ চাদর বিছিয়ে গাছ থেকে পাতা পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। আর তাদের কর্মকাণ্ড পেছনে ও পাশ থেকে দেখছেন অনেক নারী-পুরুষ। আশ্রমের এক নারী বৈষ্ণব তাদের দেখভাল করছেন।
প্রতিবছর দুদিনব্যাপী বাৎসরিক অনুষ্ঠানে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এই দুদিনে আগত ভক্তদের কলাপাতায় করে প্রসাদস্বরূপ খিচুড়ি খাওয়ায় আশ্রম কর্তৃপক্ষ। আর আগতরা ভক্তি ভরে আশ্রমের দান বাক্সে তাদের মানতের টাকা দিয়ে যায়।
আশ্রম কমিটির সভাপতি শ্রী রঞ্জন কুমার ওরফে সঞ্জয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে এ ব্যাপারে নাটোর সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান জানান, এভাবে সন্তান অসম্ভব। এমন প্রার্থনা হচ্ছে কুসংস্কার। আর সেটাই গ্রামের কিছু মানুষের অন্ধবিশ্বাস। বৈজ্ঞানিক বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এর কোনও ভিত্তি নেই।নারী-পুরুষের দৈহিক স¤পর্ক ছাড়া কারও ফু, মন্ত্র, গাছের পাতা, ফল এগুলোর দ্বারা সন্তান উৎপাদন হয় না। আবার শারীরিক নানা কারণে অনেক দ¤পতির সন্তান নাও হতে পারে। এর কারণ হতে পারে স্বামী বা স্ত্রী যে কোনও একজন বা উভয়েরই শারীরিক অসুস্থতা, ক্রোমোজমের গঠনে কোনও সমস্যা, দুর্বলতা বা অন্য কোনও কিছু। এজন্য ফকির, সাধু, দরবেশদের পিছে না ঘুরে তাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া একজন নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, অনেক নারী এসব বিশ্বাস করতে গিয়ে শারীরিক বা মানসিক নিপীড়ন এমনকি ধর্ষণের মতো ঘটনারও শিকার হন। এরপর সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে তা চেপে যান। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আধুনিক যুগে প্রতারণার শামিল। এগুলো বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি।