ঈশ্বরদী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন ১০ ডিসেম্বর সরব আ’লীগ ; মাঠে নেই বিএনপি-জাতীয় পাটির প্রার্থী


ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা ঃ
 আগামী ১০ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ, চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট গণনার পর নির্ধারণ হবে জয়-পরাজয় । শেষ মূহুর্তওে উত্তাপ নেই নির্বাচনের মাঠ। কিন্তু প্রচারণার শেষ মূহুর্তেও নির্বাচনের মাঠ উত্তাপহীন। ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করলেও সরব প্রচারণা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। মাঠে নেই বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ।
গত ২ এপ্রিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ মারা যান । এরপর আসনটি শুন্য ঘোষনা করা হয়। শুন্য ঘোষণার পর করোনার কারণে বর্ধিত সময়ে ২৬ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস। নিয়মানুযায়ী মনোনয়ন পাওয়ার পর চেয়ারম্যান পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন করেন।
চেয়ারম্যানের শুণ্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১০ ডিসেম্বর। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস। বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব সমর্থিত বিএনপির প্রার্থী ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির (একাংশের) সদস্য সচিব আজমল হোসেন সুজন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন গাউশেল আজম। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রচার-প্রচারনায় আওয়ামী লীগ সরব থাকলেও বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রচারনা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। আওয়ামী লীগ গণসংযোগ থেকে শুরু করে নিয়মিত মাইকিং এবং পোষ্টার লাগিয়ে প্রচারণা চালালেও ওই দুই দলের প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ, মাইকিং করতে ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখা যায়নি। দুয়েকটি ইউনিয়ন এলাকায় ধানের শীষের পোষ্টার দেখা গেলেও পৌর এলাকায় পোষ্টার চোখে পড়েনি। তবে লাঙ্গলের কোথায়ও পোষ্টার চোখে পড়েনি।
ঈশ্বরদী নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে এ তথ্য জানা যায়, পৌরসভা ও সাত ইউনিয়ন নিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা। উপজেলায় ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৮ হাজার ১৭৬ ও নারী ভোটার রয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৯২১ জন। ভোট কেন্দ্র ৮৪টি।
উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের অন্তত ২০ জনের মত মনোনয়নপ্রত্যাশী  ছিলেন। কে পাবে মনোনয়ন এ নিয়ে ছিল ব্যাপক আলোচনা আর জল্পনা-কল্পনা। অবশেষে মনোনয়ন পান বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রতিদিনই দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ছাড়াও যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা লীগ, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটিসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন নির্বাচনী বৈঠক করছেন। সিনিয়র নেতৃবৃন্দ প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী সভায় অংশ নিচ্ছেন। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতি করতে  জনমত গঠনে নেতা-কর্মীদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সাধারণ মানুষদের নৌকায় ভোট দেওয়ার আহবান জানাচ্ছেন।
এদিকে বিএনপি’র প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা থাকায় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণায় মাঠে তেমন নেই কেউ। আজমল হোসেন সুজন দলীয় নয়, হাবিবুর রহমান হাবিব সমর্থিত প্রার্থী বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আকবর আলী বিশ্বাস। অপরদিকে পৌর বিএনপির (একাংশ) যুগ্ম আহবায়ক এস এম ফজলুর রহমান বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের কোনো কিছুই জানায়নি কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপি। এমনকি যিনি প্রার্থী হয়েছেন তিনিও আমাদের সাথে এখনও যোগাযোগ করেননি। কেন্দ্রীয় এবং জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে যে নির্দেশনাই থাকতো আমরা তা পালন করার চেষ্টা করতাম।
উপজেলা নির্বাচন অফিস জানায়, নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহন নিশ্চিত করার জন্য র‌্যাব, অতিরিক্ত পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরে টহলে থাকবেন। আনসার, ভিডিপি ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকবেন।