নাটোর প্রতিনিধি:
কথাকাটাকাটির জের ধরে আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন নামধারী সাংবাদিক শামীম হোসেন। পরে এই অপকর্মের কথা জানাজানি হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বিষয়টি নি¯পতি হয়। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের হালসা বাজারে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে সেভেন আপ খাওয়া নিয়ে হালসা বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীরের সাথে একই এলাকার সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ী কথিত সাংবাদিক শামীম হোসেনের কথাকাটাকাটি হয়। এসময় শামীম হোসেন আলমগীরকে দেখে নেবার হুমকী দিয়ে চলে যায়। এর আধাঘন্টা পরে সে নিজেই নিজের হাত ব্লেড দিয়ে কেটে প্রতিবেশী সুজন আহমেদকে সাথে নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। পরে ঐ রাতেই চাকু মেরে দেড় লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী আলমগীরের নামে থানায় জিডি করতে যায় সে। সেখানে ডিউটিরত কর্মকর্তা বিষয়টির সত্যতা যাচাইবাছাই করে জিডি নেয়া হবে বলে জানান। পরদিন শামীম হোসেন শহরের কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে জিডি এন্ট্রি হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিউজ করতে ধর্না দেয়। এসময় নিউজের জন্য আলমগীরের ফোন নাম্বার চাইলে শামীম বন্ধ থাকা একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে সংবাদকর্মীদের বিভ্রান্ত করে। যা আদৌ আলমগীরের নয়। নাম্বার বন্ধ থাকায় আলমগীরের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি এমন কথা উল্লেখ করে চাকু মেরে শামীমের দেড় লাখ টাকা ছিনতাই শিরোনামে নিউজ করে কয়েকটি অনলাইন। যা একের পর এক শামীম হোসেন তার টাইম লাইনে আপ করে। এমন সংবাদ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন হালসার বাসিন্দারা। তারা শামীমের মিথ্যাচারিতার বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেন। বিষয়টি অবগত হয়ে হালসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গত রবিবার বেলা ১১টায় শামীম ও আলমগীরসহ তাদের স্বজনদের পরিষদে ডেকে নেয়। এসময় চেয়ারম্যান
সামান্য কথাকাটাকাটির জন্য মিথ্যা নাটক সাজানোর জন্য শামীম হোসেনকে ধিক্কার জানান এবং ভবিষৎতে এমন অপকর্ম না ঘটানোর জন্য সতর্ক করে দেন। চেয়ারম্যান জানান, অপরকে ফাঁসাতে শামীমের হীন প্রচেষ্টা অবশ্যই নিন্দনীয়। আপতত তাকে সতর্ক করেছি। ভবিষৎতে এমন কাজ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে তার বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, আমি নিরিহ মানুষ। আমাকে সন্ত্রাসী ও ছিনকারী উল্লেখ করে সংবাদ করার আগে বিষয়টা যাচাই করা উচিত ছিল।
এ বিষয়ে শামীম হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি একেক সময় একেক ধরনের অসংলগ্ন কথা বলেন। তিনি প্রথমে তার দেড় লাখ টাকা খোয়া গেছে বলে জানান, পরে আবার ৬৩ হাজার টাকার কথা বলেন, সর্বশেষ তিনি ৬১ হাজার ৩০০ টাকা তার শার্টের বুক পকেট থেকে ছিনতাই হয়েছে বলে জানান। সাংবাদিকদের কাছে এই ঘটনার মামলা হয়েছে বলে জানালেও, এখন পর্যন্ত থানায় কোন জিডি পর্যন্ত হয়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম হোসেন বলেন আমার কিছু বলার নেই। স্থানীয় চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে জেনেছি, এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন- চেয়ারম্যান একপাক্ষিক ভাবে বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে আমাকে থামানোর চেষ্টা করেছে তাই আমি চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তকে মানি না। ছুরিকাঘাত করে টাকা ছিনতাইয়ের মতো এত বড় ঘটনায় কেন প্রশাসনের আশ্রয় নেননি এমন প্রশ্নের জবাবে কথিত সাংবাদিক শামীম হোসেন কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।