বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে জায়গা জবরদখল ও হামলার অভিযোগে সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে বিপাকে পড়েছেন অসহায় মহিলা চম্পা বেগম। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের মেয়ে।প্রায় ৯মাস পূর্বে আদালতে সি.আর মামলা দায়েরের করেন চম্পা। কিন্ত এখনও থানা থেকে আদালতে প্রেরণ করা হয়নি ওই মামলার প্রতিবেদন। মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় বৃদ্ধা মা’কে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের ধারে ধারে ঘুরছেন ওই মহিলা।এব্যাপারে চম্পা বেগম গত ৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদউদ্দিনের কাছে লিখিত আবেদন করলে তিনি মামলার বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)’কে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।এদিকে, মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) না আসার কারণে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।জানা যায়, জায়গা নিয়ে বিরুধের জের ধরে মারধরের অভিযোগে সৎ ভাই আনোয়ার হোসেন (৩২) ও নূরুল হোসেন (২৪) এবং চাচা হেকিম আলীর পুত্র মুক্তার আলী (৪৮) ও চাচাতো ভাই বারিক মিয়া (২১) কে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালে ৯ ডিসেম্বর সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪র্থ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন চম্পা বেগম।বিশ্বনাথ সি.আর মামলা নং ৪১৭/২০১৯ইং। এরি প্রেক্ষিতে মামলার বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে বিশ্বনাথ থানার ওসি’কে নির্দেশনা প্রদান করেন আদালত।পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদনে বাদী চম্পা বেগম উল্লেখ করেন, তার দায়েরকৃত ওই মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্বনাথ থানার কর্মকর্তা দীর্ঘ ৯মাস পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে তদন্তপূর্বক কোন প্রতিবেদন এখনও আদালতে দাখিল করেননি।ফলে ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাদী চম্পা বেগম। যথাশীঘ্র তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানান চম্পা। চম্পা বেগম জানান, ১৯৮০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তার পিতা আলাউদ্দিন ও মাতা মাহমুদা বেগম বাড়িতে উভয়ের নামে ২৩ শতক জায়গা ক্রয় করেন।এরপর ১৯৮১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আলাউদ্দিনের কাছ থেকে তার অংশটুকু রেজিস্ট্রারির মাধ্যমে ক্রয় করেন মাহমুদা বেগম। ক্রয়কৃত ওই জায়গাতেই ঘর নির্মাণ করেন বসবাস করে আসসছেন তাদের পরিবার।পরবর্তীতের ২০১৬ সালের ২ মার্চ মাহমুদা বেগম তার সৎ পুত্র আনোয়ার হোসেন ও নুরুল হোসেনের কাছে ক্রয়কৃত ওই জায়গা থেকে ৫শতক জায়গা বিক্রয় করেন। আনোয়ার হোসেন ও নুরুল হোসেন তিনি ৫ শতক জায়গা ক্রয় করলেও তারা প্রায় ১০শতক জায়গা জোরপূর্বক ভোগদখল করে আসছে এবং তারা মাহমুদা বেগম, তার মেয়ে চম্পা বেগমকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে বিভিন্ন ধরণের ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে।এরই জের ধরে ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর সকালে অভিযুক্তরা হামলা চালিয়ে চম্পা বেগম ও তার বোন শেফা বেগমকে মারধর করে আহত করে এবং ঘরের মালামাল ভাংচুর-লুটপাট করে।এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই নূর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) প্রদানের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে থানা থেকে ৫ বার আবেদন করা হয়। কিন্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) না আসার কারণে মামলার প্রতিবেদন দেয়া যাচ্ছে না। এরপরও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।