চলতি বছর পরপর চার দফা বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শাহজাদপুর উপজলোর প্রত্যন্ত জনপদ। পানির চাপে ধসে গেছে গ্রাম এলাকার সিংহভাগ রাস্তা। ব্রিজ কালভার্টের সংযোগ সড়ক ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগ। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে অনেক এলাকার বসতভিটা। কোথাও কাঁচা-পাকা সড়কের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে হাঁটুপানি। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকায় উঠে গেছে সড়কের কার্পেটিং। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। বন্যার কারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন। সরে জমিনে ঘুরে দেখা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ছোট ছোট আঞ্চলিক কাঁচাপাকা সড়ক পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসছে ভাঙাচুরা ক্ষত। এদিকে বন্যায় ক্ষত-বিক্ষত সড়কের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে সড়কগুলো দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষ। অনেক সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে শাহজাদপুর-জামিরতা সড়ক, কৈজুরি -এনায়েতপুর সড়ক, শাহজাদপুর-খুকনি সড়ক, বেতকান্দী-মালতিডাঙ্গা সড়ক, সরিষাকোল- কায়েমপুর সড়ক, তালগাছী-শ্যামবাড়ীয়া সড়ক, শাহজাদপুর -পোতাজিয়া সড়ক, বাদলবাড়ী- রতনকান্দী সড়ক, রাণীকোলা-পোরজনা সড়ক সম্পূর্ণ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের এ পাড়ে যানবাহন রেখে ভাঙা স্থানগুলো নৌকায় পাড় হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাতায়াত কারীরা। ফলে জনসাধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল নেয়া ছাড়াও গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে মালামাল আনা-নেয়া করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। উপজেলার সোতাতনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান জানান, যমুনা চরের ১৭টি গ্রাম নিয়ে গঠিত আমার ইউনিয়ন। ইউনিয়নের সকল গ্রামই বন্যার কড়াল গ্রাসে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। যে কয়টি কাচা রাস্তা ও কালভার্ট ছিল তাও ভেঙ্গে চুরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম এবং হাট বাজারে যেতে পায়ে হাটাই একমাত্র ভরসা। গ্রামের এসকল রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলের কোন অবস্থা নেই । এবারের বন্যায় প্রায় ৩’শ বসত ভিটা, ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি কমিউনিটি ক্লিনিক যমুনা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, বন্যা পরবর্তী কর্ম সৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু হলে গ্রামের কাচা রাস্তাগুলো মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হবে। এদিকে শাহজাদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহম্মেদ রফিক বলেন, উপজেলার প্রায় ২৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ২০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা প্রকল্পে রাস্তাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কসমূহ পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে।