নাটোর প্রতিনিধি
সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের বিরুদ্ধে নাটোর জেলা ক্রিয়া সংস্থার অফিস সহায়ক লিটন আলীকে হয়রানীর অভিযোগে নাটোর সদর থানায় জিডি করা হয়েছে।আর জিডি করার কারনে আহাদ আলী সরকার প্রভাব খাটিয়ে লিটন আলীকে নারায়নগঞ্জ জেলায় বদলী করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।পাশাপাশি জিডির ১নং স্বাক্ষী ও নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওমর আলীর বাড়িতে বোববার দুপুরে আহাদ আলী সরকারের ছেলের নেতৃত্বে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।আহাদ আলী সরকারের বিরুদ্ধে করা জিডির ২ মাসেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এই ঘটনাগুলো ঘটছে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগিদের।
নাটোর সদর থানায় গত ৮ জুলাই করা জিডি থেকে জানা যায়,আহাদ আলী সরকারের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার রুয়ের ভাগ এলাকার বাসিন্দা ও নাটোর জেলা ক্রিয়া সংস্থার অফিস সহায়ক লিটন আলীকে চলতি বছরের ২৪ মে রাতে আহাদ আলী সরকারের বড় ছেলে সোহেল সরকার বাড়িতে ডেকে নেয়।এসময় সোহেল সরকার তার হুমুক মত লিটনকে চলতে বলে।এতে রাজী না হওয়ায় তাকে হত্যার হুমকি দেয়।এছাড়া তাকে বদলি করারও হুমকি প্রদান করে।এরপর থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিলেন সোহেল সরকার।এর প্রেক্ষিতে লিটন আলী নাটোর সদর থানায় আহাদ সরকার ও তার ছেলে সোহেল সরকার ও ভাই শাহাদত সরকার সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে জিডি করেন।
লিটন আলী অভিযোগ করেন, ২০১২ সালে ১৪ এপ্রিল তিনি ঢাকা জেলা ক্রীড়া অফিসের অফিস সহায়ক হিসাবে যোগদান করেন।সে সময় আহাদ আলী সরকার যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী থাকায় তাকে দিয়ে নিজ বাড়ির কেয়ারটেকারে কাজ করিয়েছেন।তিনি ৬ মাস তার বাড়িতে কাজ করার পর অপত্তি করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন আহদ আলী সরকার ।মন্ত্রী থাকার কারনে তাকে ঢাকায় পোস্টিং থাকা সত্বেও রাজশাহীর ক্রীড়া অফিসে সংযুক্ত করেন। একই ভাবে কয়েক দফায় তাকে পাবানা ও নারায়নগঞ্জ জেলায় সংযুক্ত করে হয়রানি করেন। আহাদ আলী সরকারের মন্ত্রীত্ব চলে যাওয়ার পর লিটন নাটোরে পোস্টিং নিয়ে নিজ বাড়িতে থেকেই অফিস করছেন।
লিটন আলী বলেন,নিজ বাড়ি থেকে অফিস করার কারনে সাবেক মন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের ছেলে সোহেল সরকার বিভিন্ন সময় তাদের বাড়িতে কাজ করিয়ে নিতেন।তিনি আপত্তি জানালে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এলাকাবাসীর সামনেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হতো। এই ঘটনায় লিটন জিডি করলে আহাদ আলী সরকার ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রভাব খাটিয়ে গত ১৩ আগস্ট তাকে নারায়নগঞ্জ জেলায় পোস্টিং করিয়েছেন।
লিটন আলী জানান,তার স্ত্রী যক্ষার রোগী ও এক ভাই প্রতিবন্ধি । এই অবস্থায় বদলী হওয়ায় তিনি নিরাপত্তাহীতায় ভূগছেন।তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন,জিডির সাক্ষির বাড়িতে হামলা হলে তার বাড়িতে কি হতে পারে।
জিডির ১নং স্বাক্ষী ও নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওমর আলী বলেন, জিডির সাক্ষি হওয়ার কারনে তাকে আহাদ আলী সরাকারের ছেলে হুমকি দিয়ে আসছিলো। জিডির বিষয়ে পুলিশ কোন কাজ না করায় গতকাল বোববার তার বাড়ি হামলা চালানো হয়।
ওমর আলী অভিযোগ করেন,বোববার দুপুরে হামলায় তার বাড়ির প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে।এছাড়া নগদ ৭০ হাজার টাকা ও ১ ভড়ি স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে।
অপরদিকে বাড়িতে হামলার ঘটনায় আহাদ আলী সরকারের বড় ছেলে সোহেল সরকার সহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে রোববার রাতে নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওমর আলী।
এব্যাপারে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার ঘটনা গুলো মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তার বিরুদ্ধে লিটনের করা জিডির বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান ।
আহাদ আলী সরকার দাবি করেন,গতকাল রোববার তার ছেলে সোহেল সরকার গ্রামের বাড়িতে ছিলো না। শহরের কানাইখালীর বাড়িতে ছিলো সে।
আর ওমর আলীর বাড়িতে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন,ওমরাই তার কর্মী আল আমিনকে মারপিট করে তারা বাড়িতে ঘটনাটি সাজিয়েছে।এই ঘটনার সাথে তার ছেলে জড়িত নন বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন,লিটনের করা জিডির তদন্তনের জন্য আদালতের অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনও আদালতের অনুমতি পাওয়া যায়নি।
ওমর আলীর বাড়িতে হামলা বিয়য়ে তিনি বলেন, অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। অভিযোগের তদন্ত চলছে।