লালমনিরহাট প্রতিনিধি।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় দীর্ঘ দেড় বছর এলাকাবাসীর ভোগান্তির পর আদিতমারী -মহিষখোচাগামী রাস্তার কাজটি শুরু হওয়ায় স্বস্থি ফিরে এসেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। কিন্তু কাজটি শুরুর কয়েকদিন পর আবারও শুরু হয় কমিশনে কাজটি নেয়া ঠিকাদারের টালবাহনা। ঢালাইয়ের পূর্বে শুক্রবার রাতে ওই রাস্তায় নিম্নমানের খোয়া ফেলানোর অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এসব নিম্নমানের খোয়া দিয়ে চলছে রাস্তাটি ঢালাইয়ের প্রস্তুতি।
তবে ভিন্ন কথা বললেন, আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হক। তিনি জানান, নিম্নমানের খোয়া দিয়ে রাস্তা ঢালাইয়ের কোন সুযোগ নেই।সরেজমিন ঘুরে দেখাগেছে, আদিতমারী – মহিষখোচা গামী বুড়িরবাজার নামক সড়কটির একশ মিটার আরসিসি ঢালাই করার পূর্বে নিচে খোয়া দিয়ে ঢালাই করা হবে। এর পর তার উপরে রড বসিয়ে পাথর দিয়ে ঢালাই করার কথা রয়েছে। কিন্তু শুরুতেই নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত সাড়ে এগারটার দিয়ে ওই রাস্তায় ফেলানো হয়েছে নিম্নমানের খোয়া। এসব খোয়া নিয়ে রয়েছে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ। তবে রাতেই এবিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ওই কাজের তদারকি কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, খোয়াগুলো রাস্তায় ফেলানোর আগে নেট দিয়ে পরিস্কার করার পর পানি দিয়েও পরিস্কার করতে হবে। তিনি সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের বন্যায় নষ্ট হওয়া সড়কগুলো সংস্কার করতে ফ্লাড ডিজাস্টার ড্যামেজ রুলার রোড ইনফ্লাকচার ফান্ড (এফডিডিআরআরআইএফ) প্রকল্পের আওতায় বরাদ্ধ দেয় সরকার। লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ১৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ৪০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্ধ আসে। যা বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
এ প্রকল্পের আওতায় আদিতমারী উপজেলার বুড়িরবাজার-মহিষখোচা সংযোগ সড়কের ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করতে বরাদ্ধ দেওয়া হয় ২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৭২ টাকা। যার মধ্যে বুড়িরবাজারে একশ মিটার ও মহিষখোচা বাজারে ৫শ মিটার আরসিসি ঢালাই ধরা হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদার আব্দুল হাকিম। কিন্তু তার কাছ থেকে কমিশনে কাজটি কিনে নিয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদ।জোড়াতালি দিয়ে সড়কটির সংস্কার করলেও করা হয়নি দুই বাজারে ৬ শ মিটার আরসিসি ঢালাই।আরসিসি ঢালাই অসম্পুর্ণ রেখে সাবেক উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে যোগসাজশ করে ঠিকাদার ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে মোট বরাদ্দের ৯৫ শতাংশ বিল উত্তোলন করেছেন। ফলে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অসমাপ্ত কাজটি শুরু করা হয়েছে। আর কাজ শুরতেই অভিযোগ উঠেছে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের।
তবে এবিষয়ে ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।তিনি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে বলেন।
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।