মন পবনের নাও

ভালোবাসার কোনো সীমানা নেই।
হৃদয়ের অনুভূতি আপ্লুত আবেগ
তাড়িত করে মনের মাঝে।
নদী যে আকর্ষণে ধাবিত হয় সাগর পানে।সব নদী কি মোহনার দেখা পায়?
তবুও সে আপন বেগে বয়ে যায়।
তেমনি যেন ছুটে চলা মনের মানুষের টানে।
অনেক সোনালী দিন পাড়ি দিয়ে
যেন ঠেকেছি আমি, দ্রুত ছুটে চলা সময়েরগতিকে, লাগাম টেনে ধরা অসম্ভব
এই ডিজিটাল যুগের।
ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গেছে বাবার অফিসের বহুদিনের বড় জরুরি ফাইলগুলো।
পাখাওয়ালারা হারিয়ে গেছে বৈদ্যুতিক ফ্যানের কাছে হার মেনে।
আমার আজীবন মহানায়ক বাবার সাইকেলে চড়ে অফিসের পানে ছুটে চলা,
হাসি হাসি মুখে দেখা হয় না বহুদিন।
দেখা হয়না সেই সুজন মাঝিটির সাথে
ছোট ছোট শব্দ তুলে লগি দিয়ে পানি কেটে কেটে কতো ভালোবাসায় পৌঁছে দিয়েছে লাল ফুফুর বাড়ির ঘাটলায়
কতো জ্যোৎস্না রাতে গভীর মমতায়।
একাত্তরের সেই রক্তাক্ত বিভীষিকাময় অন্ধকার রাতের অপারেশন সার্চলাইটে
হারিয়ে গেছে প্রথম প্রেম।
হারিয়ে গেছে বৌচি খেলার সেই
নির্মল দিনগুলো।
নিখাদ ভালবাসার, বেলির সুবাসিত ঘ্রাণে
রোজার দিনে নানাজীর মসজিদের আঙ্গিনায় ছুটে যাওয়া ইফতারির বক্স হাতে আমার সহোদরা ফৌজিয়াকে সঙ্গে নিয়ে।
সেই মোয়াজ্জিনের সুললিত কন্ঠের
আযানের ধ্বনি শোনা হয়নি বহুদিন।
বালি দিঘির স্বচ্ছ, শান্ত জলে দাপাদাপি করে বাল্য সাথীদের সাথে কলার ভেলা বুকে নিয়ে সাঁতার শেখার আকুতি হায়।
আবার ফিরে যেতে চাই, সেই নির্মল আনন্দের বাস্তবতায়।
প্রজাপতি প্রজাপতি খেলার ছলে
বন বাদাড়ে হারিয়ে যাওয়ার ছলনায়।
মহকুমা শহর মৌলভীবাজার থেকে স্কুল ছুটির অবকাশ কাটাতে
নানাবাড়ি রাজনগরের গন্তব্যে
খুশি খুশি মনে গোবিন্দ বাটির স্টপেজে
বাস থেকে লাফিয়ে পড়া মানস পটে ভেসে ওঠে আজও
হৃদয় তটে ছুটে চলা
মন পবনের নাও খানি।
জীবনের শেষ বেলায় ইট-পাথরের দেওয়ালে নিজকে বড় অসহায় লাগে।কৃত্রিম ভালোবাসায় বড় কষ্ট আজ।