নাটোর জেলায় এ বছর ২৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে মরিচের।যা থেকে প্রায় ১০ হাজার কেজি মরিচ উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় সদর,লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায়।কিন্ত অতি বর্ষন আর দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে অসংখ্যা মরিচ ক্ষেত।আর মরা গাছ গুলো যেন কৃষকের দীর্ঘশ্বাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জমিতে।জমি থেকে সেই গাছ তুলে ফেলারও আগ্রহ নেই কৃষকের।
কাঁচা মরিচের ঝাল আগের চেয়ে না বাড়লেও বেড়েছে এর দাম।যা অনেকটা আকাশ চুম্বি।৪০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচের দাম ছাড়িয়েছে ২শ’টাকা।ক্রেতা-ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠলেও বেশ খুশি কৃষকরা।কৃষকের পক্ষেই অবস্থান নিয়ে কৃষি বিভাগ বলছে এ সময়টাতে মরিচের দাম বৃদ্ধি হয়।দাম বাড়ার কারনে লাভবান হয় কৃষক ।বাড়ে তাদের আগ্রহ।
ভিন্ন চিত্র সেইসব কৃষকের যাদের জমিতে তরতাজা গাছ আর গাছ গুলো মরিচে ঠাসা।৪০ টাকা কেজির মরিচ এখন তারা বিক্রি করতে পারছেন ১২০ থেকে দেড়শ’ টাকায়।প্রতি সপ্তাহে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কেজি মরিচ আহরণ করছেন চাষীরা। পাইকারদের হাত ঘুরে সেই মরিচ চলে যাচ্ছে খুচরা বাহারে।খুচরা বাজারে পৌছার পর যার দাম ছাড়াচ্ছে প্রতি কেজি ২০০শ’টাকা।একদিকে হতাশা অন্যদিকে আনন্দ।কৃষকরা একবাক্যেই জানালেন ক্ষেত নষ্ট হয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় বেড়েছে দাম।
খুচরা ও পাইকারী বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজার গুলোতে মরিচের সরবরাহ রয়েছে বেশ। তবে প্রকার ভেদে দাম সেই একই রকম ১২০ থেকে ২২০ টাকা। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও চিকন আকৃতির ভারতীয় এলসি মরিচের দাম সবচেয়ে কম। মরিচের নাগাল ছাড়া দামের ব্যাপারে একই বক্তব্য পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদেরও।বর্ষার কারনে ক্ষেত নষ্ট,উৎপাদন কম,বাজারে সরবরাহ কম তাই দাম বাড়তি।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার চলমান সময়কে খরিপ-২ মৌসুম হিসাবে উলেখ করে জানান,এ সময়টাতে মরিচ সহ শবজী ক্ষেত নষ্ট হয় বৃষ্টিপাতের কারনে।এবারের টানা বর্ষণ সহ বন্যার কারনে মরিচ ক্ষেত ব্যাপক ভাবে নষ্ট হয়েছে। এ কারনে উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। বেড়েছে দাম। তবে এতে করে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন জেলার প্রধান এ কৃষি কর্মকর্তা।
ক্ষেতে ফসল থাকা কৃষকরা বাড়তি দাম পেয়ে লাভবান হলেও যাদের ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের ক্ষতি পুশিয়ে দিতে কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কেউ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের দাবি তাদের পূনরায় চাষ খরচ দিয়ে সহায়তা করলে তারা আবার নতুন উদ্যমে মাঠে আবাদে নামতে পারতেন। এমনিতেই অনেক কৃষককে এনজিওর ঋণের ঘানি টানতে হয়।তার ওপর একটি মৌসুমের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে গিয়ে নিঃশ্ব হয়ে পড়েন তারা।