চলছে পবিত্র মাহে জিলহজ ।এ মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। যা ক্ষুদ্র পরিসরে লেখনীতে আনা অসম্ভব।
জিলহজ মাসের ফজিলত সম্পর্কে নবী করিম(স:) এরশাদ করেছেন মাস সমূহের সরদার হচ্ছে রমজানুল মোবারক এবং জিলহজ মাসের শ্রেষ্ঠত্ব ও সম্মান সবচেয়ে বেশী।
পবিত্র এ মাসেই অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত হজ মোবারক এবং কোরবানি।
আজ জিলহজ্ব মাসের তিন তারিখ। ইংরেজি ২৫/৭/২০২০ । এবছর বৈশ্বিক মহামারী” করোনা ভাইরাসের” কারণে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হজ পালন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শুধুমাত্র মক্কা শরীফের স্থানীয় সামান্য কিছু মুসল্লিদের নিয়ে হজ পালিত হবে। খুবই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দিনাতিপাত করছে সারা জাহানের মুসলিম উম্মাহ।
তারপরেও কিছু বন্ধু মহল থেকে এ মাসের প্রথম ১০ দিনের ও অন্যান্য কিছু আমল আলোচনা করতে অনুরোধ করায় কলম ধরতে বাধ্য হলাম।
এ মাসেই রয়েছে ইয়াউমুত তারবীয়াহ, ইয়ামুল আরাফাহ এবং ইয়াওমুন নহর।
যে তারিখে হযরত ইব্রাহিম খলিল কোরবানির জন্য স্বপ্নে আদিষ্ট হন তা হলো ইয়াউমুত তারবিয়াহ ।
যে তারিখে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয় সে তারিখ
হলো ইয়াওমুল আরাফাহ।
আর যে তারিখে কোরবানি অনুষ্ঠিত হয়
তা হলো ইয়াউমুন নহর।
জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল সম্পর্কে অনেক হাদিস বিদ্যমান।
বিশিষ্ট সাহাবী এবং মুফাসসির কুল শিরোমনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এরশাদ করেছেন জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের একটি রোজার বিনিময়ে এক বছরের রোজার সমান সওয়াব এবং প্রত্যেক রাতের এবাদত শবে কদরের এবাদতের সমতুল্য।
উল্লেখ্য যে ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহা আর এ দিনে রোজা রাখা হারাম এবং এর পরবর্তী তিন দিন রোজা রাখা হারাম এবং পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন রোজা হারাম।” বছরে এই পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম”
যদি কেহ জিলহজের রোজা রাখতে পারেননি তাহলে অন্তত ৯ ই জিলহজ অর্থাৎ আরাফাহ দিবস একটি রোজা রাখে তবে এর দ্বারা পিছনের এক বৎসর এবং সামনের এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (মুসলিম)
সুতরাং জিলহজ মাসের এই দশ দিন তাসবিহ তাহলীল জিকির আজকার তেলাওয়াতে কোরআন বেশি বেশি পাঠ করা উচিত।
জিলহজ মাসের ৯ ই তারিখের ফজর হইতে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত নামাজে ফরজের পর একবার” আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ” পাঠ করা ওয়াজিব ।
জামাতে নামাজ পড়ার সময় ইমাম এবং মুসল্লিগণ জোরে জোরে পাঠ করবেন যদি ইমাম সাহেব পাঠ করতে ভুলে যান তবে মুসল্লিগণ জোরে জোরে পাঠ করলেই ইমামের স্মরণ এসে যাবে।
মহিলাগণ আস্তে আস্তে পাঠ করবেন ।নারী পুরুষ সকলের জন্যই পাঠ করা ওয়াজিব।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম যখন ছেলে ইসমাইল কে কোরবানি করতে উদ্যত হলেন ।
তখন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বেহেশত হতে একটি দুম্বা একটি নিয়ে খুব দ্রুত আসতে লাগেন,
যখন তিনি দেখলেন যে হয়তোবা আমি পৌঁছতে পৌঁছতে কোরবানি সমাধা হয়ে যাবে এজন্য তিনি আসমান থেকে জোরে জোরে বলতে লাগলেন
আল্লাহু আকবার আল্লাহ আকবর
হযরত ইব্রাহিম আওয়াজ শুনে আকাশ পানে তাকিয়ে বলে উঠলেন
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার
পিতার সঙ্গে সঙ্গে হযরত ইসমাইল বলে উঠলেন
আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ ।