দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর এস.কে.এল ফার্ম লিঃ

এস.কে.এল ফার্ম লিঃ। জেলার সম্ভাবনাময় এই কৃষি ভিত্তিক খামার। আতœকর্মসংস্থানের লক্ষে প্রায় ৩০০ একর ভুমির উপর গড়ে তুলেন দেশের সবচেয়ে বড় কৃষি ভিত্তিক মৎস খামার। ছোট বেলা থেকে লন্ডনে বেড়ে উঠা সৈয়দ আহমদ মুকিত সেখানে বিলাসী জীবন ছেড়ে তার উপার্জিত অর্থ দিয়ে নিজ মাতৃভুমিকে ভালবেসে বুকভরা সপ্ন নিয়ে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছেন এ সফল খামারী ও উদ্যেক্তা সৈয়দ মুকিত আহমদ। একদিকে সরকার পাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয়। সকারের পাশাপাশি অন্যদিকে দেশের বেকারত্ব কমে আসতে সহায়ক হচ্ছে। ব্যবসায়ী হিসাবে যেমন হয়েছেন সফল, তেমনি এলাকার বিভিন্ন জনকল্যাণেও ভূমিকা রেখেছেন। জনগণের বন্ধু হিসাবেও সর্বমহলে পরিচিত। সদর উপজেলার জগৎসী গ্রামের এক আলোকিত পরিবারে জন্ম নেয়া স্বপ্নবাজ সৈয়দ আহমদ মুকিত একান্ত আলাপকালে জানান- তিনি ১৯৭৭ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় পরিবারের সাথে পাড়ি জমান লন্ডনে। সেখানে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত থেকে দীর্ঘ প্রবাস জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে সোনার বাংলায়, অপার সম্ভাবনার দেশে প্রান্থিক জণগোষ্ঠির কল্যাণে নিজ এলাকায় বিনিয়োগ করে অবসর সময় দেশেই কাটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। নিজ চোখে নিজ দেশের বেকারত্ব দেখে তাঁকে মারাত্মকভাবে ব্যতিত করে। আর এজন্য বিলেতে অর্জন করা কষ্টার্জিত অর্থ ও অভিজ্ঞতা দেশে বিনিয়োগ করার লক্ষে সপ্নবাজ মানুষ মুকিত আহমদকে অনুপ্রাণিত করে। যেমন সিদ্ধান্ত তেমন বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন। ১৯৯৯ সালের দিকে গড়ে তুলেন বানিকা গ্রামে শাহ কাদেরীয়া লতিফিয়া (প্রাঃ) লিঃ। যাত্রা শুরুকালে সেখানের রাস্তাঘাটসহ অবকাটামো নানা উন্নয়ন কাজে সেখানে প্রায় ৩ হাজার লোক কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ ২শত ৫০ জন লোক সেখানে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর এই মৎস খামারের পাশাপাশি আছে ৫শত গরুর খামার, দুগ্ধ ও খাসির খামার। রয়েছে দেশী-বিদেশী হাঁস মোরগ, কবুতরসহ নানা প্রজাতির পাখি। সাগরদিঘিসহ বিভিন্ন জলাশয়ে, খামারে রয়েছে রুই,কাতলা, সিলভার,তেলাপিয়া, কার্পু, মূগেল, বোয়াল, শিং, মাগুর, কৈই,গজার, কাতলাসহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। এ সব মাছ জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকাল হলেই পাইকারদের আনাগোনা বেড়ে যায়। জেলার মৎস চাহিদা পুরণ করে দেশের নানা প্রান্তে রপ্তানি হচ্ছে এসব নানা প্রজাতির দেশীয় মৎস। খামারের প্রবেশ পথের বাম পাশে রয়েছে বিশাল শাহী ঈদগাহ, মসজিদ আর মধ্যখানে রয়েছে আলিশান প্রধান ফটক। রয়েছে খামারে উৎপাদিত ন্যায্য মূল্যের দোকান। নিজে বসবাস করার জন্য রিসোর্টের আদলে গড়ে তুলেছেন নান্দনিক কারুকাজ খচিত ডুপে¬ক্স বাড়ি। বাড়ির চার পাশের আঙিনা ঘীরে তৈরি হয়েছে মিনি পার্ক। যেখানে দর্শনার্থীদের বসার জন্য এক নির্জন পরিবেশে সময় কাটিয়ে দেওয়ার উপযুক্ত স্থান। চারিদিকে পাখির কলকাকলী মুখর সবুজ এই উদ্যান ঘীরে সাধারণ মানুষ আর দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর থাকে সারাক্ষণ। খামার ঘীরে তৈরি হওয়া এই সাম্রাজ্য দেখতে আর প্রকৃতির নয়নাভিরাম রূপ উপভোগ করতে প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্থ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। বিশেষ করে শীতকালে খামারের সবুজ গাছগাছালি ছোট বড় পুকুরের জলরাশিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সবুজ এই উদ্যানে অতিথি পাখির আনাগুনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এককথায় এস.কে.এল ফার্ম লিঃ, এর ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হয় যেন এ এক ভিন্ন জগৎ। অপরুপ এক সুন্দর পৃথিবী। এ ব্যপারে জানতে চাইলে এস.কে.এল ফার্ম লিঃ এর স্বত্তাধিকারী স্বপ্নবাজ সৈয়দ আহমদ মুকিত জানান-সকল উদ্যোক্তা সফল হয় না, সফল হয় গুটিকয়েক উদ্যোক্তা। খামার চালানোর জন্য ব্যবস্থাপনা জ্ঞান, যার ফলে খামারে লাভ আসবে। এই ব্যবস্থাপনা জ্ঞান পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা ও হাতে কলমে শিক্ষার মাধ্যমে অর্জন করা যায়। খামার শুরু, টিকে রাখা এবং উত্তোরত্তর বৃদ্ধির জন্য দরকার উদ্যোক্তা প্রাণ শক্তি, ব্যবসায় বিশ্বস্ততা ও গ্রহন যোগ্যতা বৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। বাংলাদেশ একটা সম্ভবনাময় দেশ। সোনার বাংলায় সত্যিকারের সোনা ফলানো সম্ভব। এর জন্য ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে। তিনি দেশের অন্যান্য প্রবাসী ভাইদেরকেও দেশের কল্যাণে এভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন- কাজ করলে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। আমাকেও কিছু সুবিধাভোগী লোকজন তাদের স্বার্থে আমার সাথে বিরুধীতা করার চেষ্টা করেছে। খামারের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এবং এখনও সেই চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমি দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য নিজের জীবন-যৌবন এখানে বিলিয়ে দিয়েছি। দয়া করে সোনার বাংলা গড়ার স্বার্থে কেউ কোন উদ্যেক্তা ভাই-বোনদেরকে বিপদগামী করবেন না। করলে নতুন উদ্যেক্তা সৃষ্টি হবে না। কোন লোক বিনোয়োগ করতে আসবেনা।